লেখকঃ ফজলুল হক আমিনী

লেখক পরিচিতি

ফজলুল হক আমিনী

ফজলুল হক আমিনী (১৯৪৫ - ১২ ডিসেম্বর ২০১২) বাংলাদেশের ইতিহাসে একজন ইসলামী চিন্তাবিদ, ইসলামী আইনজ্ঞ (মুফতি), ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে পরিচিত।

পারিবারিক জীবন
পরিবারে তাঁর এক স্ত্রী, দুই ছেলে ও চার মেয়ে রয়েছেন। এছাড়া তিনি মাওলানা মোহাম্মদ উল্লাহ হাফেজ্জী হুজুরের জামাতা।[১]

শিক্ষকতা জীবন
তিনি একজন ধর্মীয় চিন্তাবিদ হিসেবে যথেষ্ট সুনাম কুড়িয়েছিলেন এবং তাঁর এই জ্ঞান তিনি শিক্ষকতার মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছিলেন ঢাকার জামিয়া কোরআনিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসায়[১]। এছাড়া তিনি বড় কাটারা আশরাফুল উলুম মাদরাসা ছাড়াও অসংখ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের পরিচালক ও তত্ত্বাবধায়ক ছিলেন।[২]

রাজনৈতিক জীবন
ব্যক্তিগত জীবনে একজন ইসলামী প্রাজ্ঞ চিন্তাবিদ হলেও তিনি ছিলেন রাজনৈতিক দল ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান। আশির দশকে ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল খেলাফত আন্দোলনের মাধ্যমে রাজনীতিতে পদার্পণ করেন তিনি। পরে তিনি খেলাফতে ইসলামী নামে আলাদা দল গড়েন এবং এর চেয়ারম্যান হন।[২] ২০০১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসন থেকে চারদলীয় জোটের প্রার্থী হিসেবে সাংসদ নির্বাচিত হন। এছাড়া আমিনী ধর্মভিত্তিক একাধিক দলের মোর্চার সংগঠন ইসলামী আইন বাস্তবায়ন কমিটির আমির (প্রধান) হিসেবে মৃত্যুর পূর্বমুহূর্ত পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেছেন।[১]

গৃহবন্দীত্ব
মুফতি আমিনীর বিরুদ্ধে ধর্মীয় রাজনীতির নামে উষ্কানীমূলক রাজনীতির অভিযোগ উঠায় সরকারের পক্ষ থেকে আমৃত্যু প্রায় দেড় বছর যাবৎ তাঁকে লালবাগ মাদ্রাসা সংলগ্ন দলীয় কার্যালয়ের মধ্যে অঘোষিত গৃহবন্দী ছিলেন। ২০১১ সালের ১০ এপ্রিল মুফতি আমিনীর ছোট ছেলে মাওলানা আবুল হাসনাত অপহরণের পর ১২ এপ্রিল জোটের মহাসচিব মাওলানা আবদুল লতিফ নেজামী মুফতি আমিনীর পক্ষে নিরাপত্তা চেয়ে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আবেদন করলে আমিনীর নিরাপত্তার আবেদন কৌশল হিসেবে নিয়ে তাকে কার্যত বন্দী করে রাখা হয়। প্রায় ১৩ মাস গৃহবন্দী থাকার পর শুধু ১৫ মে ২০১২ পটিয়া মাদ্রাসার বিশিষ্ট আলেম শাহ মোহাম্মদ আইয়ুবের জানাজায় অংশ নিতে পুলিশ প্রহরায় চট্টগ্রাম যান এবং জানাযা শেষে ঐ দিনই ঢাকা প্রত্যাবর্তন করেন।[২]

মৃত্যু
২০১২ সালের ১১ ডিসেম্বর ঢাকায় হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। মুত্যুর সময় তাঁর বয়স হয়েছিল ৭০ বছর। পরদিন ১২ ডিসেম্বর মৃতের জানাযার নামায অনুষ্ঠিত হয় ঢাকার জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে, আর তাতে অংশগ্রহণ করেন অগণিত ধর্মপ্রাণ মুসলমান।[২] জানাযা শেষে তাঁর দাফন সম্পন্ন হয় তাঁরই শিক্ষাদানক্ষেত্র জামিয়া কোরআনিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসার শাহী মসজিদের কবরস্থানে।[১]

ঠিকানা