প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের পরিচিতি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়য় / University of Dhaka

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (সংক্ষিপ্ত রূপঃ ঢাবি, বা ডিইউ) ঢাকা শহরের শাহবাগে অবস্থিত বাংলাদেশের একটি সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়;[১][২] যা বহু-অনুষদভিত্তিক গবেষণা বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে পরিচিত। ১৯২১ সালে তদানীন্তন ব্রিটিশ ভারতে অক্সব্রিজ শিক্ষা ব্যবস্থা অনুসরণে এটি স্থাপিত হয়। সূচনালগ্নে বিভিন্ন প্রথিতযশা বৃত্তিধারী ও বিজ্ঞানীদের দ্বারা কঠোরভাবে মান নিয়ন্ত্রিত হবার প্রেক্ষাপটে এটি প্রাচ্যের অক্সফোর্ড নামে স্বীকৃতি পায়।[৩][৪]

বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষিত সম্প্রদায়ের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ সবচেয়ে বেশিসংখ্যক বাংলাদেশ বিজ্ঞান একাডেমি পদক লাভ করেছেন।[৫][৬] এছাড়াও, এটি বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ ও একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে এশিয়াউইকের পক্ষ থেকে শীর্ষ ১০০ বিশ্ববিদ্যালয়ে জায়গা করে নেয়।[৭] এখানে প্রায় ৩৭,০০০ ছাত্র-ছাত্রী এবং ১,৮০৫ জন শিক্ষক রয়েছে৷[১][২]

ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনকালে স্বাধীন জাতিসত্ত্বার বিকাশের লক্ষ্যে বিশ শতকের দ্বিতীয় দশকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রক্রিয়া শুরু হয়। ব্রিটিশ ভারতে তৎকালীন শাসকদের অন্যায্য সিদ্ধান্তে পূর্ববঙ্গের মানুষের প্রতিবাদের ফসল হচ্ছে এই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। এ সম্পর্কে প্রখ্যাত ইতিহাসবিদ মুনতাসীর মামুন ঢাকা স্মৃতি বিস্মৃতির নগরী গ্রন্থে লিখেছেন,

বঙ্গভঙ্গ রদের ক্ষতিপূরণ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। লর্ড লিটন যাকে বলেছিলেন স্পেল্নডিড ইম্পিরিয়াল কমপেনসেশন। পূর্ববঙ্গ শিক্ষাদীক্ষা, অর্থনীতি সব ক্ষেত্রেই পিছিয়ে ছিল। বঙ্গভঙ্গ হওয়ার পর এ অবস্থার খানিকটা পরিবর্তন হয়েছিল, বিশেষ করে শিক্ষার ক্ষেত্রে।[৮]

১৯১২ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি দেন তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের ভাইসরয় লর্ড হার্ডিঞ্জ। এর মাত্র তিন দিন পূর্বে ভাইসরয় এর সাথে সাক্ষাৎ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার আবেদন জানিয়ে ছিলেন ঢাকার নবাব স্যার সলিমুল্লাহ, ধনবাড়ীর নবাব সৈয়দ নওয়াব আলী চৌধুরী, শেরে বাংলা এ. কে. ফজলুল হক এবং অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। ২৭ মে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য প্রস্তাব করেন ব্যারিস্টার আর. নাথানের নেতৃত্বে ডি আর কুলচার, নবাব সৈয়দ নওয়াব আলী চৌধুরী, নওয়াব সিরাজুল ইসলাম, ঢাকার প্রভাবশালী নাগরিক আনন্দচন্দ্র রায়, জগন্নাথ কলেজ (বর্তমানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়)-এর অধ্যক্ষ ললিত মোহন চট্টোপাধ্যায়, ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ ডব্লিউ.এ.টি. আচির্বল্ড, ঢাকা মাদ্রাসার (বর্তমান কবি নজরুল সরকারি কলেজ) তত্ত্বাবধায়ক শামসুল উলামা আবু নসর মুহম্মদ ওয়াহেদ, মোহাম্মদ আলী (আলীগড়), প্রেসিডেন্সি কলেজের অধ্যক্ষ এইচ. এইচ. আর. জেমস, প্রেসিডেন্সি কলেজের অধ্যাপক সি.ডব্লিউ. পিক, এবং সংস্কৃত কলেজের অধ্যক্ষ সতীশ্চন্দ্র আচার্য। ১৯১৩ সালে প্রকাশিত হয় নাথান কমিটির ইতিবাচক রিপোর্ট এবং সে বছরই ডিসেম্বর মাসে সেটি অনুমোদিত হয়। ১৯১৭ সালে গঠিত স্যাডলার কমিশনও ইতিবাচক প্রস্তাব দিলে ১৯২০ সালের ১৩ মার্চ ভারতীয় আইন সভা পাশ করে 'দি ঢাকা ইউনিভার্সিটি অ্যাক্ট (অ্যাক্ট নং-১৩) ১৯২০'। লর্ড রোনাল্ডসে ১৯১৭ হতে ১৯২২ সাল পর্যন্ত বাংলার গভর্নর থাকা কালে নবাব সৈয়দ শামসুল হুদা কে বিশ্ববিদ্যালয়ের আজীবন সদস্য ঘোষণা করেন। সৈয়দ শামসুল হুদার সুপারিশে স্যার এ. এফ. রাহমান কে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভোস্ট মনোনীত করা হয়, তিনি ইতিপূর্বে আলীগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ে কার্যরত ছিলেন।[৯] পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহ সম্পর্কে রফিকুল ইসলামের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮০ বছর গ্রন্থ থেকে জানা যায়, নাথান কমিটি রমনা অঞ্চলে ৪৫০ একর জায়গায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের প্রস্তাব দেয়। এই জায়গায় তখন ছিল ঢাকা কলেজ, গভর্নমেন্ট হাউস, সেক্রেটারিয়েট ও গভর্নমেন্ট প্রেসসমূহ।

সৃষ্টির শুরুতেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নানা প্রতিকূলতার মুখে পড়ে। এ ছাড়া ১৯১৪ সালে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। এর ফলে পূর্ব বাংলার মানুষ হতাশা প্রকাশ করে। ১৯১৭ সালের মার্চ মাসে ইম্পেরিয়াল লেজিসলেটিভ কাউন্সিলে সৈয়দ নওয়াব আলী চৌধুরী সরকারের কাছে অবিলম্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বিল পেশের আহ্বান জানান। ১৯২০ সালের ২৩ মার্চ গভর্নর জেনারেল এ বিলে সম্মতি দেন। এ আইনটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠার ভিত্তি। এ আইনের বাস্তবায়নের ফলাফল হিসেবে ১৯২১ সালের ১ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যাত্রা শুরু করে।

ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বার উন্মুক্ত হয় ১৯২১ সালের ১ জুলাই। সে সময়ের ঢাকার সবচেয়ে অভিজাত ও সৌন্দর্যমণ্ডিত রমনা এলাকায় প্রায় ৬০০ একর জমির উপর পূর্ববঙ্গ এবং আসাম প্রদেশের পরিত্যক্ত ভবনাদি এবং ঢাকা কলেজের (বর্তমান কার্জন হল) ভবনসমূহের সমন্বয়ে মনোরম পরিবেশে গড়ে উঠে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। প্রতিষ্ঠার এই দিনটি প্রতিবছর "ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস" হিসেবে পালন করা হয়।

তিনটি অনুষদ ও ১২টি বিভাগ নিয়ে একটি আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে এর যাত্রা শুরু হয়। কলা, বিজ্ঞান ও আইন অনুষদের অন্তর্ভুক্ত ছিল সংস্কৃত ও বাংলা, ইংরেজি, শিক্ষা, ইতিহাস, আরবি, ইসলামিক স্টাডিজ, ফারসী ও উর্দু, দর্শন, অর্থনীতি ও রাজনীতি, পদার্থবিদ্যা, রসায়ন, গণিত এবং আইন।

প্রথম শিক্ষাবর্ষে বিভিন্ন বিভাগে মোট ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ছিল ৮৭৭ জন এবং শিক্ষক সংখ্যা ছিল মাত্র ৬০ জন। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ছাত্রী লীলা নাগ (ইংরেজি বিভাগ; এমএ-১৯২৩)। যে সব প্রথিতযশা শিক্ষাবিদ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠালগ্নে শিক্ষকতার সাথে জড়িত ছিলেন তারা হলেনঃ হরপ্রসাদ শাস্ত্রী, এফ.সি. টার্নার, মুহম্মদ শহীদুল্লাহ, জি.এইচ. ল্যাংলি, হরিদাস ভট্টাচার্য, ডব্লিউ.এ.জেনকিন্স, রমেশচন্দ্র মজুমদার, স্যার এ. এফ. রাহমান, সত্যেন্দ্রনাথ বসু, নরেশচন্দ্র সেনগুপ্ত, জ্ঞানচন্দ্র ঘোষ প্রমুখ। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন অস্থিরতা ও ভারত বিভক্তি আন্দোলনের কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অগ্রযাত্রা কিছুটা ব্যাহত হয়। ১৯৪৭ সালে ভারত ও পাকিস্তান নামক দুইটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয়। তৎকালীন পূর্ববঙ্গ তথা পূর্ব পাকিস্তানের রাজধানী ঢাকায় অবস্থিত প্রদেশের একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয়-ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে কেন্দ্র করে এ দেশের মানুষের আশা-আকাঙ্খা উজ্জীবিত হয়। নতুন উদ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকাণ্ড শুরু হয়। তৎকালীন পূর্ববাংলার ৫৫ টি কলেজ এ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হয়। ১৯৪৭-৭১ সময়ের মধ্যে ৫টি নতুন অনুষদ, ১৬টি নতুন বিভাগ ও ৪টি ইন্সটিটিউট প্রতিষ্ঠিত হয়।

১৯৫২ সনের ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ১৯৭১ এর স্বাধীনতা যুদ্ধ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের রয়েছে গৌরবময় ভূমিকা। স্বাধীনতা যুদ্ধে এ বিশ্ববিদ্যালয় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আক্রমণের শিকার হয়। এতে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং ছাত্র-ছাত্রী সহ শহীদ হয়েছেন বহুজন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীদের কঠোর নিয়ন্ত্রণে রাখার লক্ষ্যে ১৯৬১ সালে স্বৈরাচারী আইয়ুব খানের সরকার প্রবর্তিত অর্ডিন্যান্স বাতিলের জন্য ষাটের দশক থেকে শিক্ষকদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে স্বাধীনতার পর গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ উক্ত অর্ডিন্যান্স বাতিল করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অর্ডার-১৯৭৩ জারি করে। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয় এই অর্ডার দ্বারা পরিচালিত হয়ে আসছে।[১০] ১৯৩০-৩৪ জগন্নাথ কলেজ-এর অধ্যক্ষ ললিত মোহন চট্টোপাধ্যায়, ঢাকা মাদ্রাসার (বর্তমান কবি নজরুল সরকারি কলেজ) তত্ত্বাবধায়ক শামসুল উলামা আবু নসর মুহম্মদ ওয়াহেদ, মোহাম্মদ আলী (আলীগড়), প্রেসিডেন্সি কলেজের অধ্যক্ষ এইচ.এইচ.আর.জেমস, প্রেসিডেন্সি কলেজের অধ্যাপক সি.ডব্লিউ. পিক, এবং সংস্কৃত কলেজের অধ্যক্ষ সতীশ্চন্দ্র আচার্য। ১৯১৩ সালে প্রকাশিত হয় নাথান কমিটির ইতিবাচক রিপোর্ট এবং সে বছরই ডিসেম্বর মাসে সেটি অনুমোদিত হয়। ১৯১৭ সালে গঠিত স্যাডলার কমিশনও ইতিবাচক প্রস্তাব দিলে ১৯২০ সালের ১৩ মার্চ ভারতীয় আইন সভা পাশ করে 'দি ঢাকা ইউনিভার্সিটি অ্যাক্ট (অ্যাক্ট নং-১৩) ১৯২০'। পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহ সম্পর্কে রফিকুল ইসলামের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮০ বছর গ্রন্থ থেকে জানা যায়, নাথান কমিটি রমনা অঞ্চলে ৪৫০ একর জায়গায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের প্রস্তাব দেয়। এই জায়গায় তখন ছিল ঢাকা কলেজ, গভর্নমেন্ট হাউস, সেক্রেটারিয়েট ও গভর্নমেন্ট প্রেসসমূহ।

জগন্নাথ কলেজ (বর্তমান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়) ও ঢাকা কলেজের অবদান
ঢাকা কলেজ ও জগন্নাথ কলেজের (বর্তমান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়) ডিগ্রি ক্লাসে অধ্যয়নরত ছাত্রদের নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যাত্রা শুরু করে। শুধু ছাত্র নয় শিক্ষক এবং লাইব্রেরির বই ও অন্যান্য উপকরণ দিয়ে ও এই দুটি কলেজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠায় সহযোগিতা করে।এই সহযোগিতা দানের কৃতজ্ঞতা হিসেবে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের দু’টি হলের নামকরণ করা হয় ঢাকা হল (বর্তমানে ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ হল) ও জগন্নাথ হল।[১১]

বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্গত প্রতিষ্ঠান
দেশের সর্ব প্রাচীন এই বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে ১৩ টি অনুষদ, ৮২ টি বিভাগ, ১১ টি ইন্সটিটিউট এবং ৩৯ টি গবেষণা কেন্দ্র রয়েছে। এছাড়া ছাত্র-ছাত্রীদের থাকার জন্যে রয়েছে ২০ টি আবাসিক হল ও হোস্টেল।

অনুষদসমূহ
মূল নিবন্ধ: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষদসমূহ

ইনস্টিটিউট সমূহ

শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউট: দেশের শিক্ষা ক্ষেত্রের উন্নয়ন ও আধুনিকায়নের জন্য যোগ্য শিক্ষক, শিক্ষাবিদ ও শিক্ষাবিজ্ঞানী গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়ে ইন্সটিটিউটটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ইন্সটিটিউট হিসেবে USAID এর অর্থায়নে কলোরাডো স্টেট কলেজের (বর্তমানে ইউনিভার্সিটি অব নর্দার্ন কলোরাডো) টেকনিকাল সহায়তায় ১৯৫৯ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয়। এই ইন্সটিটিউটের বিভিন্ন কোর্সের মধ্যে রয়েছে চার বছরের বি.এড (সম্মান), এক বছরের এম. এড (নিয়মিত), দুই বছরের এম. এড সান্ধ্যকালীন কোর্স, এম. ফিল. ও পিএইচ.ডি.।
পরিসংখ্যান গবেষণা ও শিক্ষণ ইনস্টিটিউট: ইস্টিটিউটটি সাধারণত আই. এস. আর. টি নামে পরিচিত। ১৯৬৪ সালে এই ইস্টিটিউটটি প্রতিষ্ঠিত হয়। পরিসংখ্যানবিদ ডঃ কাজী মোতাহার হোসেন ছিলেন এই ইন্সটিটিউটের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক, বর্তমানে এর পরিচালক হলেন মোহাম্মদ সোয়াইব। এই ইন্সটিটিউটে ফলিত পরিসংখ্যান বিষয়ে চার বছর মেয়াদি বি.এস(সম্মান) ও এক বছর মেয়াদি এম. এস কোর্সে পাঠদান করা হয়।
ব্যবসায় প্রশাসন ইন্সটিটিউট
পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান ইন্সটিটিউট
সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউট
আধুনিক ভাষা ইন্সটিটিউট
তথ্য প্রযুক্তি ইন্সটিটিউট
লেদার প্রকৌশল ও প্রযুক্তি ইন্সটিটিউট
স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইন্সটিটিউট
অধিভুক্ত কলেজ/ইনস্টিটিউটসমূহ[সম্পাদনা]
মূল নিবন্ধ: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজ ও ইনস্টিটিউটসমূহ

গ্রন্থাগার
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগার আঠারো হাজার বই[১২] নিয়ে যাত্রা শুরু করে। গ্রন্থাগারে বর্তমানে ছয় লাখ আশি হাজারেরও বেশি বই রয়েছে।[১২]

স্মৃতিস্তম্ভ ও ভাস্কর্য

অপরাজেয় বাংলা ভাস্কর্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
অপরাজেয় বাংলা
সন্ত্রাস বিরোধী রাজু স্মারক ভাস্কর্য
স্বোপার্জিত স্বাধীনতা
দোয়েল চত্বর
তিন নেতার মাজার
ঢাকা গেইট
স্বাধীনতা সংগ্রাম
স্বামী বিবেকানন্দ ভাস্কর্য
শহীদ মিনার
ঘৃণাস্তম্ভ
মধুদার ভাস্কর্য
সপ্তশহীদ স্মৃতিস্তম্ভ
বৌদ্ধ ভাস্কর্য
আবাসিক হলসমূহ

মূল নিবন্ধ: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলসমূহ
বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ছাত্র-ছাত্রীকে কোনো না কোনো হলের সাথে আবাসিক/অনাবাসিক ছাত্র-ছাত্রী হিসেবে যুক্ত থাকতে হয়। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদের জন্য ১৬ টি এবং ছাত্রীদের জন্য ৫ টি আবাসিক হল রয়েছে। এছাড়া চারুকলা অনুষদ ও ব্যবসায় প্রশাসন ইন্সটিটিউটের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য রয়েছে আলাদা হোস্টেল এবং বিদেশী ছাত্রদের জন্য আন্তর্জাতিক ছাত্রাবাস।

সংগঠন

বিশ্ববিদ্যালয়ে সক্রিয় রাজনৈতিক ছাত্রসংগঠনগুলো হল বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, বিপ্লবী ছাত্রমৈত্রী ইত্যাদি। এছাড়াও উল্লেখযোগ্য সাংস্কৃতিক সংগঠনের মধ্যে রয়েছে প্রপদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চলচ্চিত্র সংসদ, চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ফটোগ্রাফিক সোসাইটি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটিং সোসাইটি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় টুরিস্ট সোসাইটি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আই টি সোসাইটি (DUITS), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সায়েন্স সোসাইটি, বিজ্ঞান আন্দোলন মঞ্চ, বাংলাদেশ ওপেন সায়েন্স অর্গানাইজেশন, বাঁধন, সাংস্কৃতিক ইউনিয়ন ইত্যাদি। তাছাড়াও মধুর ক্যান্টিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ক্যাফেটেরিয়ার সবচেয়ে বিখ্যাত।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য

প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ যাবৎ মোট ২৮ জন উপাচার্য দায়িত্ব পালন করেছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ও ২৮ তম উপাচার্য অধ্যাপক মো: আখতারুজ্জামান। তিনি বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যের দায়িত্ব পালন করছেন।

সমাবর্তন

১৯২১ সালের ১ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর ব্রিটিশ আমলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বপ্রথম নিয়মিত সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয় ১৯২৩ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি। এরপর ১৯২৪ থেকে ১৯৪৬ সাল পর্যন্ত প্রতি বছরই (সর্বমোট ২৪ বার) সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়। ব্রিটিশ আমলে শেষ সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয় ১৯৪৬ সালের ২১ নভেম্বর। পাকিস্তান আমলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয় ১৯৪৮ সালের ২৪ মার্চ। এরপর ১৯৭০ সাল পর্যন্ত আরও ১৫ বার সমাবর্তন হয়। পাকিস্তান আমলে সর্বশেষ সমাবর্তন হয় ১৯৭০ সালের ৮ মার্চ; সেটি ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৯তম সমাবর্তন। স্বাধীনতার পর প্রথমবারের মতো (৪০তম) সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট। বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য রাষ্ট্রজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাষ্ট্রপতি হিসেবে সমাবর্তন উদ্বোধন করার কথা ছিল; কিন্তু তার আগেই ভোররাতে ঘটে যায় নৃশংস হত্যাকাণ্ড, ১৫ আগস্ট ট্র্যাজেডি। এরপর ৪০তম সমাবর্তন হয় ১৯৯৯ সালের ১৮ ডিসেম্বর। এরপর ২০০১ সালে সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়। তারপর থেকে নিয়মিত ভাবেই সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সর্বশেষ ৫০তম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয় ৪ মার্চ ২০১৭ সালে।

সমাবর্তনে সম্মানসূচক ডক্টরেটপ্রাপ্তদের তালিকা

১৯২২ লরেন্স জন লামলে ডানডাস ডক্টর অব ল'জ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম চ্যান্সেলর
১৯২৫ ফিলিপ জোসেফ হার্টগ ডক্টর অব ল'জ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ভাইস-চ্যান্সেলর
১৯২৭ মহামহোপাধ্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রী ডক্টর অব লিটারেচার বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃত ও বাংলা বিভাগের প্রথম অধ্যক্ষ
আর্ল অব লিটন ডক্টর অব ল'জ বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর
১৯৩২ স্যার চন্দ্রশেখর ভেঙ্কট রামন ডক্টর অব সায়েন্স পদার্থবিজ্ঞানী
স্যার ক্রান্সীস স্ট্যানলি জ্যাকসন ডক্টর অব ল'জ বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর
১৯৩৬ স্যার আবদুর রহিম ডক্টর অব ল'জ রাজনীতিবিদ
স্যার জন এন্ডারসন ডক্টর অব ল'জ বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর
স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু ডক্টর অব সায়েন্স পদার্থবিদ, উদ্ভিদবিদ ও জীববিজ্ঞানী
স্যার প্রফুল্ল চন্দ্র রায় ডক্টর অব সায়েন্স রসায়নবিদ
স্যার যদুনাথ সরকার ডক্টর অব লিটারেচার ইতিহাসবিদ
স্যার মুহাম্মদ ইকবাল ডক্টর অব লিটারেচার কবি ও দার্শনিক
স্যার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ডক্টর অব লিটারেচার কবি ও সাহিত্যিক
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ডক্টর অব লিটারেচার কথা সাহিত্যিক
১৯৩৭ স্যার এ এফ রহমান ডক্টর অব ল'জ বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর
১৯৪৯ খাজা নাজিমুদ্দিন ডক্টর অব ল'জ পাকিস্তানের গভর্ণর জেনারেল
১৯৫১ স্যার মোহাম্মদ শাহ আগা খান ডক্টর অব ল'জ আগা সুলতান
১৯৫২ ড. আবদুল ওয়াহাব আজম ডক্টর অব ল'জ কূটনীতিক
১৯৫৬ আবুল কাশেম ফজলুল হক ডক্টর অব ল'জ রাজনীতিবিদ
ইস্কান্দার মির্জা ডক্টর অব ল'জ পাকিস্তানের গভর্ণর জেনারেল
চৌ এন লাই ডক্টর অব ল'জ গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের প্রধানমন্ত্রী
মাদাম সুংগ চিং লিং ডক্টর অব ল'জ ---
১৯৬০ জামাল আব্দেল নাসের ডক্টর অব ল'জ যুক্ত আরব প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রপতি
আইয়ুব খান ডক্টর অব ল'জ পাকিস্তানের রাষ্ট্রপতি
১৯৭৪ সত্যেন্দ্রনাথ বসু ডক্টর অব সায়েন্স (মরণোত্তর) পদার্থবিজ্ঞানী
মুহম্মদ কুদরাত-এ-খুদা ডক্টর অব সায়েন্স রসায়নবিদ
কাজী মোতাহার হোসেন ডক্টর অব সায়েন্স পরিসংখ্যানবিদ
হীরেন্দ্রলাল দে ডক্টর অব সায়েন্স বিজ্ঞানী
মুহম্মদ শহীদুল্লাহ ডক্টর অব লিটারেচার (মরণোত্তর) বহুভাষাবিদ
কাজী নজরুল ইসলাম ডক্টর অব লিটারেচার বাংলাদেশের জাতীয় কবি
আবুল ফজল ডক্টর অব লিটারেচার সাহিত্যিক
ওস্তাদ আলী আকবর খান ডক্টর অব লিটারেচার সঙ্গীতজ্ঞ
১৯৯৩ আবদুস সালাম ডক্টর অব সায়েন্স পদার্থবিজ্ঞানী
১৯৯৭ ফ্রেডারিকা মায়ার ডক্টর অব সায়েন্স ইউনেস্কোর মহাপরিচালক
১৯৯৯ অমর্ত্য সেন ডক্টর অব সায়েন্স অর্থনীতিবিদ
শেখ হাসিনা ডক্টর অব ল'জ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী
২০০৪ মাহাথির বিন মোহাম্মদ ডক্টর অব ল'জ মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী
২০০৭ মুহাম্মদ ইউনূস ডক্টর অব ল'জ অর্থনীতিবিদ
২০০৯ ইউয়ান ৎসে লি ডক্টর অব সায়েন্স রসায়নবিদ
আবুল হুসসাম ডক্টর অব সায়েন্স রসায়নবিদ
রণজিত গুহ ডক্টর অব লিটারেচার ইতিহাসবিদ
২০১০ আবদুল্লাহ গুল ডক্টর অব ল'জ তুরস্কের রাষ্ট্রপতি
২০১১ বান কি মুন[১৪][১৫] ডক্টর অব ল'জ জাতিসংঘের মহাসচিব
২০১২ প্যাসকেল ল্যামি[১৬] ডক্টর অব ল'জ বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার মহাপরিচালক
ইরিনা বোকোভা ডক্টর অব ল'জ ইউনেস্কোর মহাপরিচালক
২০১৩ প্রণব মুখোপাধ্যায়[১৭][১৮][১৯] ডক্টর অব ল'জ ভারতের রাষ্ট্রপতি
২০১৫ ফ্রান্সিস গুরি ডক্টর অব ল'জ বিশ্ব মেধাসত্ত্ব সংস্থার মহাপরিচালক
২০১৭ অমিত চাকমা ডক্টর অব সায়েন্স ভাইস-চ্যান্সেলর, ইউনিভার্সিটি অব ওয়েস্টার্ন অন্টারিও
ইউকিয়া আমানো ডক্টর অব ল'জ মহাপরিচালক, আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা


ঠিকানা