ইসলামী সংগঠনে পদলোভীর স্থান
আল্লাহর বিচারালয়ে নেতার জবাবদিহি একজন সাধারণ মুমিনের জবাবদিহির চেয়ে কঠোরতর হবে। এই জবাবদিহি সম্পর্কে সত্যকার অর্থে কোন সচেতন ব্যক্তি নেতৃত্ব-পদ লাভের আকাংখা পোষণ করবে, এটা স্বাভাবিক নয়। যদি কোন ব্যক্তির কথা আচরণ থেকে প্রমাণিত হয় যে নেতৃত্ব পদের প্রতি তার লোভ রয়েছে তাহলে বুঝতে হবে যে সেই ব্যক্তি ব্যাধিগ্রস্থ।
একমাত্র আত্মপুজারী বা স্বার্থান্ধ ব্যক্তিই ইসলামী সংগঠনের নেতৃত্ব পদ লাভের জন্য প্রার্থী হতে পারে। এই ধরনের কোন ব্যক্তি যাতে ইসলামী সংগঠনের কোন পদ পেতে না পারে সেই ব্যাপারে আল্লাহর রাসূল(সা) সদা-সতর্ক ছিলেন।
******* (আরবী টেক্সট) *******
রাসূলুল্লাহ্ (সা) বলেছেন, “হে আবদুর রহমান ইবনু সামুরাহ, নেতৃত্ব পদ প্রার্থী হয়ো না। কারণ প্রার্থী না হয়ে নেতৃত্ব প্রদত্ত হলে তুমি এই ব্যাপারে সহযোগীতা পাবে। আর প্রার্থী পয়ে নেতৃত্ব পদ পেলে তোমার ওপরই যাবতীয় দায়িত্বের বোঝা চাপিয়ে দেয়া হবে। ” সহীহ মুসলীম
******* (আরবী টেক্সট) *******
“আল্লাহর শপথ, আমরা এমন কোন লোকের ওপর এই কাজের দায়িত্ব অর্পণ করবো না যে এর জন্য প্রার্থী হয় বা অন্তরে এর আকাংখা পোষণ করে।” সহীহ বুখারী, সহীহ মুসলিম
পদ-লোভী সাধারণত: পরোক্ষভাবে নেতৃত্ব পদে আসীন হবার চেষ্টা করে। কিন্তু এই লোভ যখন মাত্রাতিরিক্ত হয় তখন সে পরোক্ষ ভূমিকা বাদ দিয়ে প্রত্যক্ষভাবে নেমে পড়ে। নিজেকে নেতা ঘোষণা করে সে লোকদেরকে তার নিকট বাইয়াত হওয়ার আহব্বান জানায়।
খুলফায়ে রাশিদিনের পর মুসলিম উম্মাহ এই ধরণের দু:খজনক ঘটনা প্রত্যক্ষ করেছ। স্বঘোষিত নেতাদের হাতে পড়ে মুসলিম উম্মাহকে বহু দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে।
মুসলিম উম্মাহ যে পরবর্তী যুগগুলোতে এই ধরনের অবাঞ্ছিত পরিস্থিতির সম্মুখীন হবে আল্লাহ তাঁর রাসূলকে (সা) এবং রাসূল(সা) তাঁর সাহাবীগণকে এই সম্পর্কে অবিহিত করেছেন। এই ধরনের পরিস্থিতির মুকাবিলা করার জন্য কী পদক্ষেপ নেয়া বাঞ্ছনীয় তাও তিনি বিশেষ ভাবে উল্লেখ করেছেন। আল্লাহ্র রাসূল(সা) বলেন,
******* (আরবী টেক্সট) *******
“অচিরেই আমর পরে বেশ কিছু সংখ্যক খালীফা হবে।” সাহাবীগণ বললেন, “হে আল্লাহর রাসূল, তখনকার জন্য আমাদের প্রতি আপনার কী নির্দেশ? তিনি বললেন, “যথাক্রমে একজনের পর আরেকজনের বাইয়াত পূর্ণ করবে। ” – সহীহুল বুখারী, সহীহ মুসলিম
******* (আরবী টেক্সট) *******
“যখন দু’জন খলীফাহর জন্য বাইয়াত গ্রহণ করা হয়, তখন যার বাইয়াত শেষে গ্রহণ করা হয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে লড়াই কর।” -সহীহ মুসলিম
******* (আরবী টেক্সট) *******
“এবং কেউ যদি নেতার নিকট বাইয়াত করে, তার হাত রেখে এবং তার নিকট অন্তরের অর্ঘ নিবেদন করে তাহলে সে যেন সাধ্যমতো আনুগত্য করে। অপর কোন ব্যক্তি যদি মুকাবিলায় আত্মপ্রকাশ করে তাহলে যেন তার ঘাড় মটকে দেয়।” -সহীহ মুসলিম
আল্লাহর রাসূলের(সা) এই বাণী থেকে বুঝা গেল যে, পদলোভী ব্যক্তিকে নেতৃত্ব পদে বরণ করে নেয়া যাবে না। তেমনিভাবে ইসলামী সংগঠন বা রাষ্ট্রের জনসমর্থনপুষ্ঠ একজন আমীর বর্তমান থাকা অবস্থায় দ্বিতীয় কোন ব্যক্তিকে আমীর স্বীকার করা যাবে না। স্বীকার করাতো দূরে থাক, এই ধরনের ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে নির্দেশ দিয়েছেন আল্লাহর রাসূল(সা)।
পদ লোভী ব্যক্তি দল বা রাষ্ট্রের নেতৃত্ব পদ লাভ করলে সে তা বিনাশই করে ছাড়ে। তদুপরি সে তার আখিরাতেও বরবাদ করে। এই সম্পর্কেই আল্লাহর রাসুল(সা)বলেছেন,
******* (আরবী টেক্সট) *******
“অচিরেই তোমরা নেতৃত্ব পদের অভিলাষী হয়ে পড়বে। আর কিয়ামাতের দিন এটা তোমাদের জন্য লজ্জা ও দু:খের কারণ হবে।” -(সহীহুল বুখারী)


পিডিএফ লোড হতে একটু সময় লাগতে পারে। নতুন উইন্ডোতে খুলতে এখানে ক্লিক করুন।




দুঃখিত, এই বইটির কোন অডিও যুক্ত করা হয়নি