মুখ্য বিষয়সমূহ
লেখকের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মােহাম্মদ জয়নাল আবেদীন স্কুল ও কলেজ ম্যাগাজিন এবং দেয়াল পত্রিকায় গল্প-কবিতা লিখে যাত্রা শুরু করলেও সার্থক লেখক হিসেবে তার আত্মপ্রকাশ ঘটে ১৯৭১ সনে একেবারে ২০ বছর বয়সে আসামের হাফলং-এ মুজিব বাহিনীর প্রশিক্ষণ শিবিরে। মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক পূর্ণাঙ্গ মঞ্চ নাটক ‘এক নদী রক্ত' রচনার মাধ্যমে- যা হাফলং-এ-ই মঞ্চস্থ হয়। বিস্ময়ের ব্যাপার হলাে ঐ নাটকে যেভাবে দেখানাে হয়েছে, ঠিক সেভাবেই বাংলাদেশের স্থপতি শেখ মুজিবুর রহমানের অনুপস্থিতিতেই দেশ স্বাধীন হয়েছে। এই সফল নাটকটির পাণ্ডুলিপি প্রশিক্ষণকেন্দ্র কর্তৃপক্ষ মুজিব বাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় অধিনায়ক মরহুম শেখ ফজলুল হক মনির কাছে দেয়ার কথা থাকলেও দেশ স্বাধীন হবার পর তার কাছ থেকে তা পাওয়া যায়নি। হাফলং-এ চিঠি। মারফত যােগাযােগ করা হলে প্রশিক্ষণ শিবিরের প্রশিক্ষক এবং ঐ নাটকের পরিচালক বি এম (বিমল মুখার্জী) পাণ্ডুলিপিটি তাদের কাছে নেই বলে নিশ্চিত করেছেন। এদিকে নাটকে অভিনয়কারী কলাকুশলী এবং জীবিত মুক্তিযােদ্ধা-দর্শকরা নাটকটির মুদ্রিত কপি পাওয়ার জন্য চিঠির পর চিঠি লিখতে থাকে। ঐসব চিঠির ক’টি হাফলং-এ পাঠালে বিমল মুখার্জী আবেদীনকে নাটকটি পুনর্লিখনের পরামর্শ দেন। কিন্তু যে পরিবেশ পরিস্থিতিতে যে ভাবাবেগ ও উচ্ছ্বাস নিয়ে হাফলং-এ ঐ নাটকটি লেখা হয় স্বাধীন বাংলাদেশে সেগুলাে বদলে যায়। এভাবে স্বাধীনতা যুদ্ধের সম্ভবতঃ প্রথম পূর্ণাঙ্গ মঞ্চ নাটকটি হারিয়ে যায় । ঐ নাটকে আবেদীন সাংবাদিকের ভূমিকায় অভিনয় করেন। আজকে তিনি কেবল প্রতিষ্ঠিত সাংবাদিকই নন, স্বীকৃত সফল গবেষকও। ১৯৭২ সনের একেবারে শুরুতে নােয়াখালী থেকে প্রকাশিত প্রখ্যাত সাংবাদিক মরহুম নাজিম উদ্দিন মানিক কর্তৃক সম্পাদিত দৈনিক বাংলাদেশ' এর মাধ্যমে তিনি সাংবাদিক হিসেবে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করেন। তৎকালীন গণকণ্ঠ ও সাপ্তাহিক ইত্তেহাদ-এর নােয়াখালী। প্রতিনিধি মােহাম্মদ জয়নাল আবেদীনের অনুসিন্ধুসু দুঃসাহসী ক্ষুরধার কলম পরবর্তীতে বৈশ্বিক, আঞ্চলিক বিশেষতঃ বাংলাদেশের স্বার্থ ও সার্বভৌমত্বের সাথে সম্পৃক্ত এমন কোন বিষয় নেই যেখানে প্রবেশ করেনি। ঢাকার অনেকগুলাে দৈনিক ও সাপ্তাহিকে এবং অধুনা ওয়েব সাইটে তিনি মানবাধিকার, গণতন্ত্র এবং স্বাধীনতার স্বপক্ষে এবং স্বাধীনতাসার্বভৌমত্ব বিরােধী সম্প্রসারণবাদী অপশক্তির মুখােশ উম্মােচন করে ইংরেজি-বাংলায় অসংখ্য গবেষণাধর্মী নিবন্ধ লিখেছেন। এছাড়া সৌদি আরব, ব্রিটেন, ভারত, পাকিস্তান প্রভৃতি দেশের সংবাদপত্রেও তার নিবন্ধ স্থান পেয়েছে। তিনি ১৯৯৫ সনে পাকিস্তানের সরকারি সংবাদ সংস্থা এপিপি’র ঢাকা প্রতিনিধি হিসেবে যােগ দেন। অভিবাসী হিসেবে আমেরিকায় যাবার কারণে ২০০৮ সনে তিনি এপিপি হতে পদত্যাগ করেন। ঢাকা থেকে প্রকাশিত ও তার সম্পাদিত পাঠকপ্রিয় সাপ্তাহিকী ‘একালের কথা তার আমেরিকায় যাবার কারণে বন্ধ হয়ে যায়।
আমেরিকায় গিয়েও তিনি সাংবাদিকতা ও শিক্ষকতার পেশায় যােগ দেন। তিনি নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত দ্বি-ভাষিক মাসিক সাময়িকী (বাংলা-ইংরেজি) আমেরিকায় মদিনার আলাে’- ‘লাইট অব দ্য আর্থ ইউএসএ; '-র সহকারী সম্পাদক এবং সাপ্তাহিক বাংলা পত্রিকার বিশেষ প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছেন। তিনি নিউইয়র্ক সিটি বাের্ড অব। এডুকেশন-এর অনিয়মিত শিক্ষক। আবেদীনের প্রতিটি রচনাই তার স্পষ্টভাষিতা, দুঃসাহসিকতা, যুক্তিনির্ভরতা, সর্বোপরি দালিলিক তথ্য-প্রমাণে সমৃদ্ধ। বাংলাদেশের খুব কম সংখ্যক সাংবাদিকই দেশের জন্য এমন অনন্য কাজ করেছেন। তার রচিত গবেষণাধর্মী গ্রন্থগুলাে পাঠান্তে যেকোন পাঠকই বলবেন, দেশ ও জাতির জন্য তিনি অসাধারণ অবদান ইতােমধ্যেই রেখেছেন। মৃত্যুভয় কিংবা বিভিন্ন ধরনের লােভাতুর প্রস্তাব তাকে তার পথ থেকে নড়াতে পারেনি। তার প্রকাশিত ‘রাজনীতিতে শ্রেণী সংকট' (১৯৭২), ‘জিয়া হত্যার নেপথ্য' (১৯৮৭), 'India Needs Veto Power' (1993), "RAW and Bangladesh' (1995), “পার্বত্য চট্টগ্রাম স্বরূপ সন্ধান”, (১৯৯৭) "The Chittagong Hill Tracts: A Victim of Indian Intervention" (20)()3), "Human Ritghts Violation in CHT" Myth & Reality" (2005), 'NAGA- A Cry for Freedom" (2007), "BDR Massacre: Target Bangladesh" (2009) প্রভৃতি কালজয়ী গবেষণাধর্মী গ্রন্থ বাংলাদেশের জন্য অনন্য সম্পদ, যেগুলাে যুগ। যুগ ধরে দেশী-বিদেশী সাংবাদিক, লেখক-গবেষকদের অনুপ্রেরণা ও তথ্য যােগাবে। তার অনন্য কর্মের স্বীকৃতি হিসেবে ২০০৭ সনে লন্ডনভিত্তিক গবেষণাধর্মী প্রতিষ্ঠান "London Institute of South Asia (LISA)" তাকে আন্তর্জাতিক পুরস্কারে ভূষিত করে। বিভিন্ন কারণে তার রচিত 'এক নদী রক্ত', 'একটি নক্ষত্রের পতন’, Indian Friendship : An Unbearable Burden সহ বেশ কটি গ্রন্থ এখনাে মুদ্রণের মুখ। দেখেনি। আবেদীন ১৯৬৪ সনে পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগের সাবেক নােয়াখালী, চট্টগ্রামের উত্তরাঞ্চল এবং কুমিল্লা দক্ষিণাংশে ছয় দফা ও ১১-দফা আন্দোলন জোরদারকরণে অগ্রণী ভূমিকা রাখেন। এ কারণে পাকিস্তান প্রতিরক্ষা আইন (ডিপিআর) ও সামরিক আইনে যথাক্রমে ১৯৬৮ ও ১৯৬৯ সনে তাকে দীর্ঘদিন আটক রাখা হয়। তিনি পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগ নােয়াখালী জেলা শাখার সাংস্কৃতিক সম্পাদক (১৯৬৭), নােয়াখালী কলেজ শাখার সাধারণ সম্পাদক (১৯৬৮), নােয়াখালী জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক (১৯৬৯) এবং নােয়াখালী জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক (১৯৭২-জাসদপন্থী) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। জাসদের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড এবং এর মূল শেকড় কোথায় তা অনুধাবন করতে সক্ষম হয়ে ১৯৭৩ সনে তিনি রাজনীতি হতে সরে দাঁড়ান। তিনি ১৯৭০ সনে নােয়াখালী সরকারি কলেজ ছাত্র সংসদের নির্বাচিত সভাপতি হিসেবে তিন বছর (১৯৭০-৭২) সততা ও সাফল্যের সাথে দায়িত্ব পালন করেন। বিবিধ বিষয়ে গভীর জ্ঞানের অধিকারী যুক্তি-নির্ভর ও বক্তা হিসেবে আবেদীন নােয়াখালী সরকারি কলেজ বার্ষিক সাহিত্য ও বিতর্ক প্রতিযােগিতায় দুই দুইবার (১৯৬৯-১৯৭২) চ্যাম্পিয়ন হবার গৌরব অর্জন করেন।
প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের পরিচিতি
সংশ্লিষ্ট বই
পিলখানা হত্যাকাণ্ডঃ টার্গেট বাংলাদেশ
লেখকঃ মােহাম্মদ জয়নাল আবেদীন
প্রকাশনীঃ ইস্টার্ন পাব্লিকেশন্স
পিলখানায় ২৫-২৬ ফেব্রুয়ারি (২০০৯) সংঘটিত সমসাময়িক ইতিহাসের। নজিরবিহীন ভয়াবহতম হত্যাকাণ্ড বাংলাদেশের অস্তিত্ববিরােধী শক্তিই ঘটিয়েছে। যা বাংলাদেশের ভিত্তিমূলে চরম ঝাকুনি দিয়ে এর সীমান্ত পাহারা এবং প্রতিরক্ষা। ব্যবস্থাপনাকে নড়বড়ে করেছিল। এর উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমতুকে অকেজো করা। এ বিপর্যয় আপােসহীন ও অনমনীয় লিসা (লন্ডন ইন্সটিটিউট অব সাউথ এশিয়া) পুরস্কারপ্রাপ্ত সাংবাদিক ও গবেষক। মােহাম্মদ জয়নাল আবেদীনকে যারপরনাই ব্যথিত ও আতঙ্কিত করে। আত্মতাড়িত হয়ে তিনি নিতান্ত স্বল্প সময়ের মধ্যে আমাদের ইতিহাসের। সৰ্বাধিক মর্মান্তিক একটি অধ্যায় লিপিবদ্ধকরণে উদ্যোগী হন। তিনি পিলখানার। এই নিন্দনীয় ভয়াবহতম হত্যাকাণ্ডের মধ্যে আমাদের জন্মভূমির স্বাতন্ত্র, সীমান্ত। ও মানচিত্র তুলে দেয়ার এক মহাচক্রান্ত দেখতে পান ।। গ্রন্থকার তার অনুসিন্ধত্স দৃষ্টি, তথ্য ও যুক্তির মাধ্যমে বিডিআর সদর দফতরে। অমানবিক হত্যাকাণ্ডের আড়ালে থাকা রূপকারের মুখােশ উন্মােচন করেছেন ।। আনুষঙ্গিক প্রমাণাদি, বাস্তব পরিস্থিতি, ঐতিহাসিক ঘটনাপ্রবাহ ও ধারাবাহিক। পটভূমি, ভারতীয় প্রস্তাব, উত্তত পরিস্থিতি থেকে ভারতের প্রাপ্তি, বিশেষত: এ। হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে ভারতের অকারণ যুদ্ধ-প্রস্তুতি প্রভৃতি বিশ্লেষণ করে । তিনি দেখিয়েছেনভারতই এই নারকীয় ঘটনার নেপথ্য রূপকার। সামান্য কিছু ত্রুটি-বিচ্যুতি ও সীমাবদ্ধতা সত্বেও এ গ্রন্থ আমাদের প্রিয় মেধাবী। ও চৌকস সেনা কর্মকর্তাদের নারকীয়ভাবে খুনের ইতিবৃত্ত নথিভুক্তকরণে সময়ােচিত অনন্য উদ্যোগের দলিল। এটা নিঃসন্দেহে গ্রন্থকারের অনন্য। অবদান, যা অনাগতকালের গবেষক ও ঐতিহাসিকদের কাছে রেফারেন্স’ হিসেবে সমাদৃত হবে। জনসাধারণ্যে পাঠক ছাড়াও এই গ্রন্থ বিডিআর,। সেনাবাহিনী, গােয়েন্দা সংস্থাসহ রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক, শিক্ষাবিদদের মাঝে ভীষণভাবে আদত হবে। এ গ্রন্থ বাংলাদেশের শত্রু-মিত্র নির্বিশেষে সবার কাছে কিছু বার্তা পৌঁছে দেবে। এ ধরনের একটি তথ্য-সমৃদ্ধ প্রামাণ্য গ্রন্থের রচয়িতা। মানবতা, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতি শ্রদ্ধাশীল সর্বমহলের স্বীকৃতি ও । প্রশংসার দাবী রাখেন।
- প্রিয়তে যোগ করতে লগিন করুন
- লাইব্রারীতে যোগ করতে লগিন করুন
পিডিএফ লোড হতে একটু সময় লাগতে পারে। নতুন উইন্ডোতে খুলতে এখানে ক্লিক করুন।
দুঃখিত, এই বইটির কোন অডিও যুক্ত করা হয়নি