মজবুত ঈমানের সুরভিত গোলাপ
আবু জেহেল। ইতিহাসের পাতায় একটি অভিশপ্ত নাম। আবু জেহেলের মন ছিল কপটতায় ভরা, জীবন ছিল পাপ ও পঙ্কিলতায় পরিপূর্ণ। তাই সততা ও ন্যায়নীতি ছিল তার কল্পনার বাইরে। বিপদগামীদের সর্দার ছিল আবু জেহেল। সত্যকে পছন্দ করা তো দূরের কথা, সত্যের নামও সে শুনতে পারত না।

সে সময় আরবের সমাজ ভালো ছিল না। গোটা সমাজ অন্যায়, পাপাচার, অনাচার ও অবিচারে পরিপূর্ণ ছিল। মানুষ এক আল্লাহকে ভুলে গিয়ে অনেক প্রভুর ইবাদাত করত। আরবে তখন হানাহানি ও দলাদলি লেগেই থাকত। প্রাচীন আরবের লোকেরা মেয়েদের জীবন্ত কবর দিত। এভাবে এক ঘোর অন্ধকারে ডুবে ছিল আরব সমাজ।

একসময় দুনিয়ায় এলেন মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা)। আল্লাহ তাঁকে নবী করে পাঠালেন। মহানবী (সা)-এর কাজ ছিল মানুষকে কল্যাণের পথ দেখানো। তাঁর সাথে ছিল সত্যের আলো। এ আলোর নাম ইসলাম। মানুষকে অসত্য ও অন্যায়ের পঙ্কিলতা থেকে মুক্ত করার জন্য এটা ছিল একমাত্র পথ। কিন্তু আবু জেহেলের কাছ এটা পছন্দ হলো না। সে ছিল অন্ধকার পথের মানষ। বাপ-দাদার ধর্ম ছাড়া সে কিছুই বুঝতে চাইত না। তাই সে ইসলামের বিরোধিতা করল। এ জন্য নবী (সা)-কেও সে অনেক কষ্ট দিল। শুধু তাই নয়, যারা মুহাম্মদ (সা)-এর ধর্ম মেনে নিত তাদের ওপরও চালাত নির্যাতন। মাঝে মাঝে চাবুক মেরে তাদের চামড়া তুলে নিত। আবু জেহেলের সাঙ্গো-পাঙ্গরা ছিল একই প্রকৃতির। মুসলমানরে দেখলেই তাদের গা জ্বলে উঠত।

আবু জেহেলের পুত্রের নাম ইকরামা। পুরো নাম ইকরামা বিন আবু জেহেল। পিতার মতো ইকরামাও ভালো লোক ছিল না। সে ছিল আল্লাহর দীনের ঘোর শত্রু। বাবার পঙ্কিল চরিত্র ইকরামাকে পেয়ে বসেছিল। তাই সে ইসলামকে ভালো চোখে দেখত না। ইসলামের প্রতি তার ছিল সীমাহীন বিদ্বেষ। মুসলশানদের সাথেও সে ভালো ব্যবহার করত না। সুযোগ পেলেই সে মুসলমানদের ওপর নির্যাতন চালাত। ইসলামের আলো তার অন্ধকার মনকে নাড়া দিতে পারল না, বরং ইসলামের প্রসার দেখে তার বৈরী মনোভাব আরও প্রকট হয়ে উঠল।

তবে আবু জেহেল ও ইকরামাদের দাপট বেশী দিন টিকল না। ধীরে ধীরে ইসলামের আলো মক্কার জনপদে ছড়িয়ে পড়ল। দেখতে দেখতে মুসলমানদের দল ভারী হয়ে উঠল। একসময় মুসলমানদের জীবনে দেখা দিল সোনালী সুদিন। আরবের মরুতে ফুটতে শুরু করল ঈমানের সুরভিত গোলাপ। আর তার সুরভি ছড়িয়ে পড়ল চারদিকে।

এরি মধ্যে কাফেরদের সাথে মুসলমানদের শক্তির লড়াই শুরু হলো। আর এর ফলে ঘটে গেল বদর যুদ্ধ, ইসলামের প্রথম জেহাদ। সেটা ৬২৪ সালের কথা। মদীনা থেকে ১৮০ কিলোমিটার দূরে ঐতিহাসিক বদর প্রান্তর। সেখানে সুসজ্জিত কাফেরদের সাথে মুসলমানদের তুমুল লড়াই হলো। শত্রুরা ছিল অস্ত্র-শস্ত্র ও লোকবলে বহুগুণে শক্তিশালী। কাফেরদের সৈন্যসংখ্যা ছিল এক হাজার। অন্যদিকে মুসলমানদের অস্ত্র ছিল নামমাত্র। তাদের সংখ্যাও ছিল অনেক কম, তিনশ’ তেরজন মাত্র। মুসলমারা সংখ্যায় কম হলে কী হবে, আল্লাহর কৃপায় তারা যুদ্ধে জয়ী হলো, কাফেরদের ঘটল চরম পরাজয়। দুর্ভাগ্যক্রমে আবু জেহেল বদর প্রান্তরে নিহত হলো। পুত্র ইকরামাও যুদ্ধে অংশ নিয়েছিল। তবে বাগ্যক্রমে সে বেঁচে গেল।

তারপর কেটে গেল অনেক বছর। এর মধ্যে শত্রুদের সাথে মুসলমানদের আরও অনেক লড়াই হলো। কিন্তু কাফেররা বারবার পরাজিত হলো। ফলে মদীনায় ইসলামের সুষমা আরও বিস্তৃত হলো। মহানবী (সা) এবার মাতৃভূমি মক্কায় ফিরে আসতে চাইলেন। কারণ, জন্মভূমিতে ইসলামের আলো ছড়িয়ে দিতে হবে। তাই তিনি পরিকল্পনা গ্রহণ করলেন। মক্কা বিজয়ের স্বপ্ন দেখলেন মহানবী (সা)।

ঐতিহাসিক অষ্টম হিজরি সালের ঘটনা। দশই রমজাদের এক আলো ঝলমল দিন। মাত্র দশ হাজার সাহাবী নিয়ে মহানবী (সা) মক্কা অভিমুখে রওয়ানা করলেন। প্রায় বিনা বাধায় তিনি মক্কা নগরী জয় করলেন। মক্কার আকাশে উড়ল ইসলামের বিজয় কেতন। তাই মক্কার বড় বড় শত্রুরা হতবাক হয়ে গেল। তারা কিছু বুঝে ওঠার আগেই মক্কা শত্রুদের হাতছাড়া হয়ে গেল। তাই তারা দিশেহারা হয়ে পড়ল। এখন উপায়! তারাযে মুসলমানদের পরম শত্রু। অথচ আজ তাদের জন্মভূমি মুসলমানদের দখলে! তাই প্রচণ্ড মৃত্যুভয় তাদের তাড়া করল। কাফেররা ভাবল, আজ আর রক্ষা নেই। মুহাম্মদের লোকেরা তাদের ছাড়বে না। হাতের নাগালে গেলেই তারা মারা পড়বে। তাই তারা চারদিকে ছোটাছুটি করতে লগাল। জান বাঁচাতে যে যার মতো পালাতে শুরু করল।

কিন্তু তাদের এ ধারণা অল্পক্ষণ পরেই ভুল বলে প্রমাণিত হলো। শত্রুরা মহানবী (সা)-এর চরিত্রমাধুর্য ভালো করে জানত না। তিনি যে ক্ষমতার নবী, তাঁর মন যে পবিত্র ও সুন্দর তা তারা অনুমানও করতে পারল না। তবু তাদের অনেকে মনে সাহস জুগিয়ে মহানবী (সা)-এর কাছে এলো, নিজেদের অপরাধের জন্য করজোড়ে ক্ষমা চাইল। নবী মুহাম্মদ (সা) সাথে সাথেই তাদের ক্ষমা করে দিলেন। ইসলামের অনেক বড় দুশমনও সেদিন ক্ষমা পেয়ে গেল। মহানবী (সা)-এর এ ক্ষমা ও উদারতার মহিমা বিদ্যুৎ গতিতে মক্কায় ছড়িয়ে পড়ল। তাই মানুষ দলে দলে মহানবী (সা)-এর কাছে ছুটে এলো। তারা নবীজির ভালো ব্যবহার ও উদার মন দেখে অবাক হলো। তাদের ভুল ভেঙে গেল। তাই কাফের মুশরেকরা ইসলামের দীক্ষা গ্রহণ করে নিজেদের পবিত্র করে নিল। দেখতে দেকতে ইসলামের পতাকার নিচে এসে জড়ো হলো হাজার মানুষ।

এ অবস্থা দেখে আবু জেহেলের ছেলে ইকরামা ভয় পেয়ে গেল। সে বুঝতে পাল তার আজ রক্ষা নেই। সে যে বড় অপরাধী। তার সীমাহীন অপরাধ যা ক্ষমার অযোগ্য, তা সে ঠিকই অনুধাবন করতে পারল। তাই ইকরামা পালাবার পথ খুঁজল। মক্কার অদূরেই জেদ্দার উপকূল। সেখান থেকে নৌকায় চড়ে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে ছূটে চলল ইকরামা। লোহিত সাগরের পানিতে ভেসে চলছে তার নৌকা। কিন্তু ইকরামার বদনসিব। সাগরের ভয়ঙ্কর উর্মিমালা আর প্রবল ঝড় তার যাত্রাপথ আগলে ধরল। ঢেউয়ের পর ঢেউ এসে ইকরামার নৌকার ওপর আছড়ে পড়ছিল। ঢেউয়ের আছাড় খেয়ে ইকরামার নৌকা সাগরের অথৈ পানিতে তলিয়ে যাবার উপক্রম হলো। ইকরামা দেখতে পেল পাহাড়সম ঢেউ এসে তাকে ডুবিয়ে দিতে চাইছে। ওদিকে পেছনে আবার মুহাম্মদ (সা)-এর লোকেরা তাকে মৃত্যুর হাতছানি দিয়ে ডাকছে।

এমন সময় ঘটে গেল এক অভিনব ঘটনা। ইকরামার স্ত্রী এম্ম হাকিম স্বামীকে খুঁজতে খুঁজতে তীরে এসে উপস্থিত হলো। অনেকক্ষণ ধরে সে স্বামীর দূরবস্থা দূর থেকে অবলোকন করছিল। তাই স্বামীকে সাহায্য করতে সে দৌড়ে এলো। উম্মে হাকিম চিৎকার করে বলল,

: ওগো! শোন, তাড়াতাড়ি তীরে উঠে এসো। তোমার জন্য ভালো খবর নিয়ে এসেছি। তোমার কোনো ভয় নেই। তুমি তীরে চলে এসো।

‘ভয় নেই?’ –শব্দটি ইকরামার কর্ণকুহরে এসে প্রবেশ করতেই সে চমকে উঠল। প্রচণ্ড ঝড় ও সাগরের প্রকাণ্ড ঢেউয়ের আচরণে সে স্থির থাকতে পারছিল না। আবার স্ত্রী মুখে অভয় বানী শুনে তাও সে অগ্রাহ্য করতে পারল না। তাই ইকরামা তীরে এসে পা রাখল। তখনও ভয়ে ইকরামার সমস্ত শরীর কাঁপছিল। উম্মে হাকিম তাকে শান্ত হতে বলল। সে জানাল,

: আমি রাসূলের কাছ থেকে তোমার নিরাপত্তার আশ্বাস নিয়ে এসেছি। তিনি তোমাকে মাফ করে দিয়েছেন। তোমার আর কোনো ভয় নেই। তাই চলো, নবীজির কাছে চলো।

স্ত্রীর কথা ইকরামা বিশ্বাস করতে পারছিল না। তার মন বলছিল, তার মতো এত বড় অপরাধীকে কেউ মাফ করতে পারে না। যদি কেউ করে তা হলে তার মন অবশ্যই অনেক বড়। সে অবশ্যই মহামানব ছাড়া আর কেউ নয়। আল্লাহর নবী (সা) সম্পর্কে ইকরামার যে খারাপ ধারণা ছিল স্ত্রীর কথায় তা খানিকটা কেটে গেল। তারপরও ইকরামা মুহাম্মদ (সা)-এর সামনে গিয়ে দাঁড়াবার মতো সাহস করতে পারল না।

ইকরামার দ্বিধা-দ্বন্দ্ব তখনও কাটছিল না। এদিকে মহানবী (সা)-এর সাথে খারাপ ব্যবহারের জন্য তার মধ্যে লজ্জা ও অনুশোচনা কাজ করছিল। এভাবে ভয়, দ্বিধা ও লাজুকতা নিয়েই ইকরামা একসময় এগিয়ে চলল। সে যাচ্ছে আল্লাহর নবীর সাথে দেখা করতে। খানিকক্সণ পরই ইকরামা মহানবী (সা)-এর কাছাকাছি এসে পৌঁছাল।

একটু দূরে থাকতেই ইকরামা মুহাম্মদ (সা)-এর চোখে পড়ে গেল। তার চোখও গিয়ে পড়ল মহানবী (সা)-এর চোখের ওপর। ইকরামা এবার লাজে ও ভয়ে আরও বেশী আড়ষ্ট হয়ে পড়ল।

আল্লাহর নবী তো মহামানব। বড় মনের মানুষ। তাই তিনি নিজে এগিয়ে এসে ইকরামাকে বুকে জড়িয়ে ধরলেন। নবীজির এই অপূর্ব ব্যবহারে ইকরামা সীমাহীন বিস্ময়ে যেন পাথর হয়ে গেল। মহানবী (সা)-এর এ আচরণ যে তার কল্পনারও বাইরে। তাই দুনিয়ার সব বিস্ময় এসে তাকে যেন নির্বাক করে দিল। তার গোটা দেহমনে তৃপ্তির এক অভিনব শিহরণ খেলে গেল। কৃতজ্ঞতার আতিশয্য ইকরামার জীবনকে প্রচণ্ডভাবে নাড়া দিল। ইকরামা যেন আর কিছুই ভাবতে পারছে না। মহানবী (সা)-এর চরিত্রমাধুর্যে সে এখন সীমাহীন মুদ্ধ। তাই তার শির অনায়াসে মহানবী (সা)-এর সামনে নত হয়ে এলো। ইসলামের অনুপম সৌন্দর্য দেখে সে আর স্থির থাকতে পারল না। কিছুক্সণ পর ইকরামার বিস্ময়ের ঘোর কাটলে সে কী করবে না করবে ভেবে পাচ্ছিল না। এবার ইকরামা ধীরে ধীরে মহানবী (সা)-এর মুখের দিকে সহানুবূতি পাওয়ার দৃষ্টিতে তাকাল। তাঁর কাছে অত্যন্ত বিনীতভাবে ক্ষমা চাইল। সে বলল,

: হে আল্লাহর নবী! আমি না বুঝে গুরুতর অপরাধ করেছি। আপনার সাথে অনেক অন্যায় আচরণ করেছি। আপনার বিরুদ্ধে লড়াই করে আমি অমানুষের মতো কাজ করেছি। আমি আপনাকে অনেকবার কষ্ট দিয়েছি। আজ আমি ক্ষমা চাই। আপনি আমাকে মাফ করে দিন। আর আমাকে মুসলমান করে নিন।

মহানবী(সা) যে ইকরামাকে আগেই মাফ করে দিয়েছেন। তবে তার কাতর অনুরোধ এবং অনুতাপ দেখে তিনি যারপরনাই খুশি হলেন। নতুন এক ইকরামাকে পেয়ে মহানবী (সা)-এর মন ভরে গেল। এ জন্য তিনি আল্লাহকে শোকরিয়া জানালেন। আর দু’হাত তুলে মহান স্রষ্টার কাছে ইকরামার হেদায়াতের জন্য দোয়া করলেন। মহানবী (সা)-এর এই মুনাজাত দেখে ইকরামা আরেকবার অবাক হলো। তার মনের ভেতর যেন ইসলামের আলো নড়ে উঠল। ফলে ইকরামার দুচোখ বেয়ে নেমে এলো আনন্দের অশ্রুধারা।

খানিকক্ষণ ধরে আর কোনো কথাই বলতে পারল না। এরি মধ্যেই তার মনে কেলে গেল অনেক স্বপ্ন, অনেক আশা। তিনি মনে মনে ঠিক করলেন, নিজেকে এবার ইসলামের জন্য উৎসর্গ করে দেবেন। তাই নিতি নবীজিকে বললেন,

: ইয়া রাসূলুল্লাহ! আমি দীনের পথে কাজ করতে চাই। আমি এতদিন হক ও সত্যের যতটা বিরোধিতা করেছি, ইসলামের জন্য তার দ্বিগুণ কাজ করব। আপনি আমার জন্য দোয়া করুন।

মহানবী (সা) ইকরামার জন্য আবারও প্রাণভরে দোয়া করলেন। এর মধ্যেই অনেকক্ষণ সময় গড়িয়ে গেল। এবার ইকরামা ঘরে ফিরে যাবার জন্য মনস্থ করলেন। কিন্তু প্রাণের নবীকে ছেড়ে যেতে তার মন কিছুতেই সায় দিচ্ছিল না। ইকরামার বুক যেন কেঁপে কেঁপে উঠছিল, মন ছিঁড়ে যাচ্ছিল।ফলে তার দু’চোখ বেয়ে আবারও নামল অশ্রুধারা। এ অশ্রু মুছতে মুছতেই ইকরামা একসময় মহানবী (সা)-এর কাছ থেকে বিদায় নিলেন। তারপর থেকে ইকারাম আর বসে থাকেননি। ইসলামের খেদমতে তিনি সবসময় ব্যস্ত থেকেছেন। ঈমানের যে গোলাপ মহানবী (সা) তার মনে সবসময় ব্যস্ত থেকেছেন। ঈমানের যে গোলাপ মহানবী (সা) তার মনে ফুটিয়ে তুলেছিলেন তার সুরীভ মেখে তিনি কাটিয়ে দিলেন বাকিটা জীবন।

ব ল তে পা রো?

১। ইকরামা কে ছিলেন? তিনি কেমন লোক ছিলেন?

২। মক্কা কখন বিজিত হয়? এ অভিযানে মহানবী (সা)-এর সাথে কতজন সাহাবী ছিলেন?

৩। ইকরামা কিসের ভয় পাচ্ছিলেন? তার স্ত্রী কী খবর নিয়ে এলো?

৪। ইকরামা ইসলামের কাজ করার জন্য মহানবী (সা)-কে কী বলেছিলেন?


পিডিএফ লোড হতে একটু সময় লাগতে পারে। নতুন উইন্ডোতে খুলতে এখানে ক্লিক করুন।




দুঃখিত, এই বইটির কোন অডিও যুক্ত করা হয়নি