ইউসুফ ও জুলেখা
বৃদ্ধ বয়সে বিবি সারা খাতুনের গর্ভে হযতর ইব্রাহিমের এক পুত্র সন্তান জন্মে। তাঁহার নাম ইসরাইল (আঃ)। ইসরাঈলের দুই পুত্র ইয়াশা ও ইয়াকুব। ইয়াকুবের বারোটি পুত্র, তন্মধ্যে একাদশ পুত্র হযরত ইউসুফ। কনিষ্ঠ পুত্রের নাম বনি-ইয়ামিন।

হযরত ইয়াকুব জানতেন যে, ইউসুফ ভবিষ্যৎ জীবনে নবী হবেন। তিনি অতি গুণবান, শ্রী ও লাবণ্যমণ্ডিত ছিলেন। শৈশবেই ইউসুফ ও বনি ইয়ামিন মাতৃহীন হন। নানা কারণে হযরত ইয়াকুব অন্যান্য সন্তান অপেক্ষা ইউসুফকে একটু বেশী আদর যত্ন করতেন। এই জন্য বিমাতার গর্ভে অপর দশজন ভ্রাতা ইউসুফকে একটু ঈর্ষার চক্ষে দেখতেন।

ইউসুফ একদা রাত্রে স্বপ্ন দেখতে পেলেন –সূর্য চন্দ্র ও এগারটি নক্ষত্র তাঁকে যেন অভিবাদন করছে। পরদিন পিতার নিকটে কথাটা বললেন। ইয়াকুব স্বপ্ন-বৃত্তান্ত শুনে খানিকক্ষণ চিন্তা করে বললেনঃ তোমার পিতামাতা ও এগারটি ভাইয়ের চাইতে তুমি শ্রেষ্ঠ হবে। কিন্তু সাবধান করে দিচ্ছি তোমর অপর ভ্রাতাদের নিকটে এ বিষয়ে কিছু বলো না। কারণ তা হলে তারা তোমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করতে পারে।

পিতার মনে আশঙ্কা ছিলো একে তো ভাইরা ইউসুফকে হিংসার চোখে দেখে তার ওপরে তারা কোনো গতিকে স্বপ্নের কথা জানতে পেরে হয়তো আরো হিংস্র হয়ে উঠতে পারে।

কিন্তু সাবধানতা সত্ত্বেও ভ্রাতারা স্বপ্ন বৃত্তান্ত জানতে পারলো। তারা পরামর্শ করতে লাগলো, কিরূপে ইউসুফকে তাদের মধ্য থেকে সরিয়ে দেওয়া যায়। অনেক যুক্তিতর্কের পর তারা স্থির করলো তাঁকে না মেরে কূপের মধ্যে ফেলে দেওয়া হবে। যদি ভাগ্যে থাকে কোন পথিকের দয়ায় তাঁর প্রাণরক্ষা হলেও হতে পারে।

এইরূপ পরামর্শ করে তারা পিতার নিকটে গিয়ে বললেনঃ আব্বা, ইউসুফ তো এখন বড়োসড়ো হয়েছে, ওকে আর বাড়িতে রাতদিন না রেখে আমাদের সঙ্গে মাঠে পাঠিয়ে দিন। সেখানে সে খেলাধূলা করবে। আমরা তাকে দেখাশুনা করবো।

হযরত ইয়াকুব প্রথমে তাদের কথায় রাজি হলেন না। কিন্তু তাদের পীড়াপীড়ি ও অনেক তর্কের পর অবশেষে তাদের সঙ্গে যেতে অনুমতি দিলেন।

পরের দিন তারা ইউসুফকে অনেক দূরে এক নির্জন মাঠের মধ্যে নিয়ে গিয়ে তার দেহ থেকে জামা কাপড় খুলে নিয়ে তাকে নির্দয়ভাবে প্রহার করলো। ইউসুফ প্রায় মরে যাবার মতো হলেন। তাদের সবচেয়ে বড় ভাই বললোঃ তোমরা ওকে মেরে ফেলো না। ওকে কূয়ার মধ্যে ফেলে দাও।

তখন নিতান্ত অনিচ্ছা সত্ত্বেও তাকে তারা কূপের মধ্যে ফেলে দিয়ে বাড়ি চলে গেলো।

বাড়ি এসে পিতার নিকটে তারা কপট দুঃখ প্রকাশ করতে করতে জানালোঃ আব্বা ইউসুফকে বাঘে খেয়েছে। এই দেখুন তার জামায় রক্ত।

হযরত ইয়াকুব আর কি করেন। তিনি শোকে মুহ্যমান হয়ে কাঁদতে লাগলেন। কয়েকদিন পরে একদল সওদাগর সেই পথ দিয়ে যাচ্ছিলেন। মরুভূমির পথে সঙ্গে পানীয় প্রায় নিঃশেষ হওয়ার কূপ থেকে পানি সংগ্রহের ইচ্ছা করে তাঁরা বালতি নামিয়ে দিলেন। সেই সময়ে খোদার আদেশে ইউসুফ তাঁদের বালতির মধ্যে উঠে এলেন। ওদিকে তাঁর দশ ভাই তখন সেখানে ভেড়া চরাচ্ছিল। তারা ইউসুফকে দেখতে পেয়ে ছুটে এসে বললোঃ কি আশ্চর্য, এ যে আমাদের সেই গোলাম –কয়েক দিন থেকে পালিয়ে এসেছে। একে যদি আপনারা ক্রয় করেন তবে আমরা বিক্রি করতে পারি।

প্রতিবাদ করলে ভ্রাতারা পাছে তাঁকে বধ করে এই ভয়ে ইউসুফ চুপ করে রইলেন। কয়েকটি টাকা দিয়ে সওদাগরেরা তাঁকে কিনে নিলেন। সওদাগরের সঙ্গে ইউসুফ মিশর দেশে গিয়ে হাজির হলেন। সেখানে তাঁকে কিনে নিলেন। সওদাগরের সঙ্গে ইউসুফ মিশর দেশে গিয়ে হাজির হলেন। সেখানে তাঁকে তাঁরা বাদশাহের এক আত্মীয় কিৎফীর আজিজ নামক একজন সম্ভ্রান্ত ব্যক্তির নিকটে বিক্রয় করলেন। আজিজ ইউসুফকে তাঁর স্ত্রী জুলেখার খাস গোলাম করে দিলেন।

ইউসুফ বয়ঃপ্রাপ্ত হবার সঙ্গে সঙ্গে অসামান্য রূপবান হয়ে উঠতে লাগলেন। তাঁর অপরূপ শ্রী, লাবণ্য ও সুগঠিত দেহ সৌষ্ঠবের প্রতি প্রভু-পত্নী জুলেখা দিন দিন আকৃষ্ট হতে লাগলেন। একদিন তিনি তাঁর প্রতি আনুগত্য হবার জন্য অনুরোধ জানালেন। কিন্তু ইউসুফ সে কথায় একেবারে কর্ণপাত মাত্র করলেন না। জুরেখা নানা প্রকার প্রলোভন দিয়েও তার মন জয় করতে পারলেন না। অবশেষে নিরাশ হয়ে তিনি তাঁর স্বামীর নিকটে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ করলেন।

ইউসুফ দোষারোপের প্রতিবাদ করে বললেনঃ এই নারীই আমাকে অন্যায় কার্যে লিপ্ত করবার চেষ্টা করেছে।

এইরূপে একে অন্যের নামে দোষ দেবার চেষ্টা করতে লাগলেন। ইউসুফ ও জুলেখার এই সকল কাহিনী ক্রমে প্রকাশ হয়ে পড়লো। অন্যান্য রমণীরা ছি ছি করতে লাগলো। তারা জুলেখার দোষ দিতে লাগলো।

জুলেখা যখন জানতে পারলেন যে, তাঁর সম্বন্ধে অপরাপর মহিলারা অন্যায় আলোচনা আরম্ভ করেছে, তখন তিনি তাদের জব্দ করার জন্য ফন্দী আঁটলেন। তিনি একদিন তাদের নিমন্ত্রণ করলেন এবং ছুরি দিয়ে কেটে খেতে হয় এমন একটি খাবার প্রস্তুত করলেন। সকলে খেতে এলে তাদের প্রত্যেককে এক একটি ছুরি দিলেন। তারা যখন খেতে আরসম্ভ করেছে ঠিক সেই সমেয় জুলেখা ইউসুফকে ডাকলেন। ইউসুফকে দেখে মেয়রা এত বিস্মিত ও মুগ্ধ হলো যে তারা খাবার কাটতে গিয়ে নিজেদের আঙ্গুল কেটে ফেললো। তারা বলাবলি করতে লাগলোঃ এত রূপ! এত সুন্দর! এ কি মানুষ না ফেরেশতা।

জুলেখা সেই সময়ে সুযোগ পেয়ে বললেনঃ তোমরা আমাকে দোষী করছিলে –এবার তো তোমরাও দোষী।

নিমন্ত্রিত মহিলারা এবাসের সত্য সত্যই লজ্জিত হলো।

ইউসুফের প্রতি নারীদের এইরূপ আসক্তির কথা জানতে পেরে সমাজের মাতব্বরেরা শঙ্কিত হলেন। তাঁরা নৈতিক জীবন পবিত্র রাখার জন্য ইউসুফের বিরুদ্ধে বাদশাহের নিকট অভিযোগ করলেন। বাদশাহ উপায়ান্তর না পেয়ে নিরপরাধ ইউসুফের কারাবাসের হুকুম দিলেন।

ইউসুফক কয়েদখানায় নেওয়া হলো। তাঁর সঙ্গে আরো দু’টি যুবককে কারাগারে প্রেরণ করা হলো।

একদা রাত্রে সেই যুবক দু’টি স্বপ্ন দেখলো। সেই স্বপ্নের কথা ইউসুফকে জানালো। একজন বললো, সে যেন আঙ্গুর থেকে রস বের করছে।

অপর একজন বললো, সে যেন মাথায় বয়ে রুটি নিয়ে যাচ্ছে! কতকগুলি পাখি সেই রুটিগুলো ঠুকরে খাচ্ছে।

ইউসুফ খোদাতা’লার কৃপায় প্রগাঢ় তত্ত্বদর্শী হয়েছিলেন। তিনি স্বপ্ন-বৃত্তান্ত শ্রবণ করে বললেনঃ দেখ, তোমাদরে একজন শীঘ্রই মুক্তি পাবে এবং বাদশাহের সঙ্গী নিযুক্ত হয়ে তাঁকে শরবত পান করাবে। অপরজনের ফাঁসী হবে এবং তার মাথা পাখিতে ঠুকরে খাবে।

কয়েকদিনের মধ্যেই ইউসুফের ভবিষ্যদ্বাণী সত্য সত্যই ফলে গেলো। একজন মুক্তি পেলো অপর জনের ফাঁসী হলো। যে ব্যক্তি মুক্তি পেয়েছিলো সে বাদশাহের অনুচর নিযুক্ত হলো।

কিছুদিন পরে বাদশাহ এক স্বপ্ন দেখলেন, সাতটি কৃশকায় গাভী সাতটি বলবতী গাভীকে খেয়ে ফেলছে এবং সাতটি শীর্ণ ধানের শীষ সাতটি সতেজ ধানের শীষকে খেয়ে ফেলছে। বাদশাহ পরদিন দরবারে স্বপ্ন বৃত্তান্ত প্রকাশ করে অনুচরদের কাছে এর অর্থ জানতে চাইলেন। কিন্তু কেউ সদুত্তর দিতে পারলো না। কারাগারের সেই যুবক সেখানে উপস্থিত ছিলো। ইউসুফের কথা তার মনে পড়ে গেলো তখনই তাঁর কাছে গিয়ে সে স্বপ্নের ব্যাখ্যা জানতে চাইলো। ইউসুফ বললেনঃ প্রথমে সাত বৎসর খুব ভীষণ অজন্মা ও দুর্ভিক্ষ হবে সে সময় তোমরা সেই সঞ্চিত শস্য থেকে খরচ করতে পারবে।

স্বপ্নের ব্যাখ্যা জানতে পেয়ে বাদশাহ খুব সন্তুষ্ট এবং ইউসুফকে তাঁর নিকটে আনবার সঙ্কল্প করলেন।

যে সকল মেয়ে অসাবধানতায় নিজেদের আঙ্গুল কেটে ফেলেছিলো, তাদের কাছে অনুসন্ধান করে বাদশাহ জানতে পারলেন ইউসুফ তাদের সংগে কোনো অসদ্ব্যবহার করেননি। তারাই ইউসুফকে তাদের দিকে আকৃষ্ট করতে চেয়েছিলো। জুলেখাও সেখানে ছিলেন। তিনি এ কথার সত্যতা সম্পর্কে সাক্ষ্য দিলেন। বাদশাহ সব কথ শুনে অনুতপ্ত হলেন এবং ইউসুফকে মুক্তি দিয়ে তাঁকে রাজ্যের প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত করলেন।

ইউসুফের স্বপ্নের ব্যাখ্যা সত্য সত্যই সফল হলো। প্রথম সাত বৎসর ভাল ফসল হলো এবং পরের সাত বৎসর ভীষণ দুর্ভিক্ষ দেখা দিলো।

মিশরের সঞ্চিত খাদ্যের কথা জানতে পেরে নানা দেশ থেকে লোকজন আসতে লাগলো। ইউসুফের ভ্রাতারাও খাদ্যদ্রব্য ক্রয় করতে এলো। তিনি তাদের দেখে চিনতে পারলেন, কিন্তু তারা তাঁকে চিনতে পারলো না। তিনি ভ্রাতাদের খাদ্য দিয়ে বলে দিলেনঃ আবার যখনআসবে তোমাদের ছোট ভাইকে সঙ্গে নিয়ে এসো। তাকে না নিয়ে এলে খাদ্য পাবে না। এই বলে অনুচরবর্গের দ্বারা কিছু অর্থ গোপনে খাদ্যের থলির মধ্যে পুরে দিলেন।

তারা বাড়ি গিয়ে তাদের পিতাকে মিশরের শাসনকর্তার অনেক গুণের কথা বর্ণনা করলো এবং এবারে ছোট ভাইকে নিয়ে যাবার জন্য বলে দিয়েছেন সে কথাও জানালো। হযরত ইয়াকুব তাদের পূর্বের কাজ স্মরণ করে কনিষ্ঠ পুত্র বনি ইয়ামিনকে তাদের সঙ্গে দিতে রাজি হলেন না।

খাদ্যের বস্তা খোলা হবার পর তার মধ্যে টাকা দেখতে পেয়ে তারা খুবই বিস্মিত হলো।

পুনরায় খাদ্যাভাব ঘটলে তারা তাদের পিতাকে গিয়ে শক্ত করে ধরে বললোঃ আব্বা, আপনি ছোট ভাইকে আমাদের সংগে যেতে দিন। খোদার নামে শপথ করে বলছি, আমরা তাকে অক্ষত দেহে ফিরিয়ে নিয়ে আসবো।

পিতা তাদের জিদের কাছে পরাজিত হয়ে অগত্যা অনুমতি দিলেন। বনি-ইয়ামিনকে সংগে নিয়ে তারা গেলো এবং ইউসুফের নির্দেশ অনুযায়ী ভিন্ন ভিন্ন দরজা দিয়ে শহরে প্রবেশ করলো। ইউসুফের কাছে যখন তারা পৌঁছলো তখন ছোট ভাইকে ডেকে নিয়ে তিনি নিজের পরিচয় প্রদান করলেন।

অন্যবারের মতন এবারেও তাদের বস্তা বোঝাই করে খাদ্য দেওয়া হলো। ইউসুফের এক চাকর একটি পেয়ালা ইচ্ছা করে ছোট ভাইয়ের বস্তায় লুকিয়ে রেখে দিলো।

পেয়ালা হারিয়ে যাওয়ায় বিশেষ সোরগোল পড়ে গেলো। অবশেষে অনেক খোঁজা-খুঁজির পর বনি-ইয়ামিনের বস্তার মধ্যে সেটা পাওয়া গেলো।

বনি-ইয়ামিনকে বাদশাহের কাছে বিচারের জন্য নিয়ে যাওয়া হলো। তার ভ্রাতারা বললেনঃ আমাদের পিতা খুব বৃদ্ধ হয়েছেন। এটি তার সকলের ছোট ছেলে। একে ফিরিয়ে না নিয়ে গেলে পিতা বড়ই কষ্ট পাবেন। আপনি এর বদলে আমাদের একজনকে রাখুন!

ইউসুফ বললেনঃ তা হতে পারে না।

সকলের বড় ভাই অন্যান্য সকলকে বললোঃ তোমরা ফিরে যাও, আমি আল্লাহর নাম শপথ করে পিতাকে বলে একে নিয়ে এসেছি। কোন মুখে পিতার কাছে ফিরে যাবো। আমি বনি-ইয়ামিনের সঙ্গে এখানেই থাকবো‍!

তারা দেশে গিয়ে হযরত ইয়াকুবকে সমস্ত সংবাদ জানালো। তিনি শুনে দুঃসহ শোকে আর্তনাদ করতে লাগলেন। শোক কিঞ্চিৎ প্রশতিম হলে বললেনঃ দেখ আল্লাহর দয়ায় আমি অনেক কিছু জানি। তোমরা আল্লাহর ওপরে বিশ্বাস রেখে ইউসুফ ও বনি ইয়ামিনের খোঁজ করো।

পিতার আদেশে তারা পুনরায় মিশরে গেলো এবং খাদ্য কিনতে চাইলো। সেই সময় ইউসুফ তাদের কাছে নিজের পরিচয় প্রদান করলেন। বললেনঃ আল্লাহতা’লা তোমাদের ক্ষমা করবেন, তিনি ক্ষমাশীল। তোমরা আমার এই জামা পিতার কাছে নিয়ে যাও, তাহলে তিনি জানতে পারবেন।

আল্লাহর কৃপায় ইয়াকুব সব জানতে পারলেন। ইউসুফের ভাইরা এসে তার জামা পিতাকে দিলেন। হযরত ইয়াকুব খুশী হয়ে বললেনঃ পূর্বেই বলেছি, আমি যা জানি তোমরা তা জান না।

ইউসুফের পরামর্শ মতো তাঁর ভ্রাতারা তাদের পিতামাতা ও অন্যান্য পরিজনদের নিয়ে মিশরে গেলেন। সেখানে ইউসুফ তাঁদের বসবাস করবার ব্যবস্থা করে দিলেন।


পিডিএফ লোড হতে একটু সময় লাগতে পারে। নতুন উইন্ডোতে খুলতে এখানে ক্লিক করুন।




দুঃখিত, এই বইটির কোন অডিও যুক্ত করা হয়নি