লেখকঃ ডাঃ ইদ্রিস আলী

লেখক পরিচিতি

ডাঃ ইদ্রিস আলী

ইন্দ্রিস আলী (স্টেডিয়াম রোড, মেহেরপুর) মেহেরপুর জেলার মুজিবনগর হাইস্কুলের বিজ্ঞান বিষয়ক শিক্ষক। তিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রথম মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গর্বিত। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে ঢাকা পিলখানায় ইপিআর হেডকোয়ার্টারে হত্যাযজ্ঞের সংবাদে ২৬ মার্চ তদানীন্তন মেহেরপুর মহাকুমার এসডিও জনাব তৌফিক ইলাহী চৌধুরী ভারতে যোগাযোগের জন্য মুক্তিযুদ্ধে যোগদানের ঘোষণা দিলে তিনি দেশের স্বার্থে একবাক্যে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের জন্য রাজী হয়ে যান। অতপর ২৬ মার্চ তিনি তার বন্ধু মাস্টার মুজিবর রহমান ও দু'জন আনসারসহ গভীর রাতে জনাব তৌফিক ইলাহী চৌধুরী সাহেবের মেসেঞ্জার হিসেবে তাঁর লেখা ও সীলমােহরকৃত একটি পত্র নিয়ে ভারতের নবীননগর সীমান্ত পথে নাটনা বিএসএফ ক্যাম্পে পৌছান। ঐ পত্রের বিষয়বস্তু ছিল, ‘Our Indian bretheren, Helpus with arms. SIF-1 (I, IIFI(7Cos AfriS SICassizis যুদ্ধের সূচনাই হয় জনাব তৌফিক ইলাহী চৌধুরীর মাধ্যমে। পরে মেজর জিয়াউর রহমানের মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণায় জনাব তৌফিক ইলাহী চৌধুরীর তৎপরতা আরো জোরালো হয়। তারপর লেখক নাটনা ক্যাম্প থেকে রাত ১২টায় বেতাই বাজারের সীমান্ত বিএসএফ ক্যাম্প লাল বাজারে পৌছলে ঐ ক্যাম্পের প্রধান মি. ক্যাপ্টেন ইয়াদভ চৌধুরী তাকে সাদরে গ্রহণ করেন। পত্রটি তার হাতে দেয়ার পরপরই তিনি ওয়ারলেসে যোগাযোগ শুরু করেন। বিভিন্ন সামরিকপর তিন দিনের দিন নবীননগর সীমান্তে উভয় দেশের নেতৃবৃন্দ ও অফিসারদের সমঝোতা হয়। তখন থেকে তার মাধ্যমে শুকনো খাদ্য ও অস্ত্ৰ-শস্ত্ৰ মেহেরপুর হয়ে কুষ্টিয়া ও বগুড়া রণাঙ্গনে সরবরাহ হতে থাকে। পাক বাহিনীর প্রচণ্ড চাপের মুখে সতের দিন যুদ্ধ চলার পর ১৭ এপ্রিল মুজিবনগর আম্রকাননে অস্থায়ী বাংলাদেশ সরকার গঠনান্তে ভারতে প্রবেশ করতে হয়। শুরু হয়। ভারতে বসে বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলন। তখন লেখকরা মেহেরপুর অঞ্চলে গোয়েন্দা বিভাগের কাজে রিপোর্ট সংগ্রহে নিয়োজিত ছিলেন। দীর্ঘ ৯ মাস আন্দোলনের মুখে হানাদার পাক বাহিনী আত্মসমৰ্পণ করতে বাধ্য হয়। জনাব ইদ্রিস আলী দেশ স্বাধীনের দেড়মাস পূর্বে মেহেরপুর শহরে রিপাের্ট সংগ্রহে গেলে পাক বাহিনীর হাতে ধরা পড়েন এবং প্রায় এক মাস পাক র হাতে আটক থাকেন। এ সময় তিনি অনেক বিভৎস কাণ্ড দেখেন, তা স্মরণে এখনাে তার মন শিউরে ওঠে। আল্লাহর অপার কৃপায় বৈদ্যুতিক শক খেয়েও তিনি প্ৰাণে বেঁচে যান এবং অবশেষে অপ্রত্যাশিতভাবে মুক্তি লাভ করেন। মুক্তি পেয়ে আবার তিনি তার এক ভাইরা হারুন রসিদের সহযোগিতায় মেহেরপুরের तू शकळ অবস্থানের তথ্য ভারতের গোর্থ বাহিনীর একজন মেজরের কাছে সরবরাহ করেন। এ তথ্যের ওপর ভিত্তি করে মেহেরপুর অঞ্চলে বিরাট সফলতা অর্জনে সক্ষম হয় বাংলাদেশের স্বাধীনতাকামী বাহিনী। অবশেষে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় সূচিত হলে বাঙালি জাতি "বাংলাদেশ' নামে একটি স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসেবে বিশ্বে পরিচিতি লাভ করে। অতপর তিনি আবার তার কর্মজীবন শিক্ষকতায় মনোনিবেশ করেন। বর্তমানে তিনি শিক্ষকতার পাশাপাশি হােমিও চিকিৎসক হিসেবেও যথেষ্ট খ্যাতি অর্জন করেছেন। তিনি খুলনা হােমিও প্যারামেডিকেল বোর্ড থেকে এল.এইচ.এম.পি. ডিগ্ৰী লাভ করেন। ডাক্তার ইদ্রিস আলী মেহেরপুর প্যারামেডিকেল হােমিওপ্যাথি কলেজেরও একজন শিক্ষক। এছাড়া তিনি একজন বিশিষ্ট লেখক ও গবেষক। ইতিমধ্যে তার লেখা প্রায় একডজন বই প্রকাশিত হয়েছে। বিস্ময়কর লক্ষণে হােমিও চিকিৎসা’ বইটি হােমিওপ্যাথি চিকিৎসার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলে আমাদের বিশ্বাস।

ঠিকানা