বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম

ভূমিকা
আল্লাহ পাকের বিশেষ মেহেরবানীতে ‘আসহাবে রাসূলের জীবনকথা, ৫ম খন্ড’ প্রকাশিত হচ্ছে। অল্প কথায় বাংলাভাষী পাঠকদের নিকট সাহাবায়ে কিরামের (রা) পরিচয় তুলে ধরাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য। ইতিপূর্বে প্রকাশিত চারটি খন্ডে পুরুষ সাহাবীদের জীবনকথা আমরা আলোচনা করেছি। ৫ম খন্ডে এগারো জন ‘উম্মাহাতুল মুমিনীন’ এর জীবনকথা আলোচনা করা হয়েছে। এ এগারো জন ছিলেন হযরত রাসূলে কারীমের (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘আযওয়াজে মুতাহ্হারাত’ বা পুতঃপবিত্র সহধর্মিণী।

ইসলামের পুরুষ নারীকে সমান দৃষ্টিতে দেখা হয়েছে। উভয়ের সমান দায়িত্ব ও সমান অধিকার ঘোষিত হয়েছে। এ বিশ্বে ইসলামের প্রচার-প্রতিষ্ঠায় পুরুষের যেমন ত্যাগ-তিতিক্ষা ও অবদান রয়েছে, তেমনি আছে নারীরও। পুরুষরা যেমন যুলুম-অত্যাচারের শিক্ষার হয়েছেন, জন্মভূমি থেকে বিতাড়িত হয়েছেন, নারীরাও তেমনি যুলুম অত্যাচার সহ্য করেছেন, দেশত্যাগে বাধ্য হয়েছেন। পুরুষদের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে নারীরা ইসলাম বিরোধশিক্তির বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছেন। মোটকথা, এ বিশ্ব ইসলামকে বিজয়ী করতে মহিলা সাহাবীরা কোন অংশে পুরুষ সাহাবীদের থেকে পিছিয়ে থাকেননি। বরং কোন কোন ক্ষেত্রে নারীর ভূমিকা প্রধান হয়ে উঠেছে। রাসূলুল্লাহর (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নবুওয়াত ও রিসালাতের উপর সর্বপ্রথম ঈমান এনেছেন একজন নারী, সর্বপ্রথম সালাত আদায় করেছেন একজন নারী। ইসলামের জন্য নারীর অবদান পুরুষের চেয়ে কোন অংশে কম নয়। তাই আমরা পুরুষ সাহাবীদের পাশাপাশি মহিলা সাহাবীদের জীবন ও কর্মের কতা পাঠকদের কাছে তুলে ধরার উদ্যোগ গ্রহণ করেছি।

আরকী ভাষায় রচিত ‘আসমা আর-রিজাল’ (চরিত্র-অভিধান) শাস্ত্রের প্রায় সকর গ্রান্থে মহিলা সাহাবীদের পরিচয় ও জীবনকথা আলোচিত হয়েছে। ইবন মুন্দাহ্ (হিঃ ৩৯৫), আবু নু‘আইম, ইবন ‘আবদিল বার (হিঃ ৪৬৩), আবু মূসা ইসফাহানী (হিঃ ৫৮১) প্রত্যেকেই নিজ নিজ গ্রন্থে মহিলা সাহাবীদের জীবনী আলেচনা করেছেন। ইবন ‘আবদিল বার তাঁর ‘আল ইসতী ‘আব’ গ্রন্থে মোট ৩৯৮ জন মহিলা সাহাবীর জীবনী আলোচনা করেছেন। মুহাম্মদ ইবন সা‘দের (হিঃ ২৩৩) ‘আত-তাবাকাত আল-কুবরা’ গ্রন্থে মোট ৬২৭ জন মহিলার জীবনী এসেছে। তার মধ্যে ৯৩ জন সাহাবী নন এমন মহিলাও আছেন। তাঁর গ্রন্থের ৮ম খন্ডে মহিলাদের জীবনী সন্নিবেশিত হয়েছে। ‘আল্লামা ইবনুল আসীর ‘তারিখ আন-নিসা’ শিরোনামে মহিলাদের জীবনীর উপর একখানি গ্রন্থ রচনা করেন। পরবর্তীকালে রচিত বিভিন্ন গ্রন্থেও নামটি পাওয়া যায়। তবে বর্তমানে গ্রন্থটি দুষ্প্রাপ্য। ইবনুল আসাীরের আরেকটি উলে্খযেগ্য গ্রন্থ ‘উসুদুল গাবা ফী মা ‘ রিফাতিস সাহাবা’। এর একটি খন্ডে শুধু মহিলাদের জীবনকথা এসেছে। এ গ্রন্থে মোট ১০২২ জন মহিলা সাহাবীর নাম পাওয়া যায়। হিজরী নবম শতকের আরেকজন বিখ্যাত লেখক আল্লামা ইবন হাজার আল-আসকিলানী (হিঃ ৮৫২)। তিনি ‘তাহযীবুত তাহযীব’ ও ‘আল-ইসবা ফী তাময়ীযিস সাহাবা’ নামে দুইখানি বৃহদাকৃতির গ্রন্থ রচনা করেন। ‘তাহযীবুত তাহযীব’-এর ১২ তম খন্ডে ৩২২ জন মহিলার জীবনী আলেচনা করেছেন। তাঁদের মধ্যে কিছু মঞিলা তাবে’ঈর জীবনীও আছে। তবে ‘আল-ইসাবা’ গ্রন্থে ১৫৪৫ জন মহিলা সাহাবীর জীবনকথা স্থান পেয়েছে। এ গ্রন্থেই সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মহিলা সাহাবীর নাম ও পরিচয় পাওয়া যায়্ তবে উপরে বিভিন্ন গ্রন্থে মহিলা সাহাবীদের যে সংখ্যা উলে্খ করা হয়েছে তার মধ্যে অনেক নামের পুনরাবৃত্তি হয়েছে। ইমাম আয-যাহাবীর (হিঃ ৭৪৮) ‘সিয়ারু আ’লাম আন-নুবালা’ ও ‘তাজকিরাতুল হুফফাজ’-দুইখানিবড়[ আকারে গ্রন্থ। তাতে তিনি বহু মহিলা সাহাবীর জীবনী সন্নিবেশ করেছেন। উল্লেখিত গ্রন্থগুলিই মূলতঃ সাহাবীদের উপর রচিত মৌলিক গ্রন্থ। উক্ত গ্রন্থগুলির সবই আমাদের সামনে রয়েছে।

হযরত রাসূলে কারীমকে (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যাঁরা ঘরের জীবনে সার্বিকভাবে সাহায্য করেছেন এবং রাসূলুল্লাহর (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পারিবারিক জীবনের আদর্শের কথা মানুষের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন ত৭ারা হলেন-‘আযওয়াজে মুতাহ্হারাত’। আল্লাহ পাক তাঁদেরকে ‘উম্মুহাতুল মুমিনীন’ (ঈমানদারদের মা) বলে ঘোষণা দিয়েছেন। তাঁরা মুসলিম নারীদের মডেল বা আদর্শ। ৫ম খন্ডে আমরা তাঁদের কথাই আলোচনা করেছি। তাঁদের সংখ্যা মোট এগারো জন। রাল্লুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন পৃথিবী থেকে বিদায় নেন তখন তাঁদের সংখ্যা ছিল নয়।

বর্তমান সময়ে আমরা মুসলিমরা যখন পাশ্চাত্য জীবন দর্শন দ্বারা দারুণভাবে প্রভাবিত এবং ইসলামের ‘আকীদা-বিশ্বাস, কৃষ্টি-কালচার, আইন-কানুন ইত্যাদি সবই তাদের দৃষ্টি দিয়ে বিচার-বিশ্লেষণ করছি, বিশেষতঃ নারী স্বাধীনতা ও প্রগতির নামে ইসলাম বিরোধী যে কর্মতৎপতরা প্রবল বেগে বয়ে চলেছে তখণ রাসূলুল্লাহর ((সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একাধিক স্ত্রী গ্রহণের বিষয়টি একচন ঈমানদারের মনেও প্রশ্ন দেখা দিতে পারে। আমরা সে প্রশ্নের জবাব দানের চেষ্টা এখানে করবো না। কারণ এ প্রশ্ন নতুন নয়, বরং খ্রীস্টান-ইহুদীরা তা বহুকাল আগেই উত্থাপন করেছে এবং মুসলিম মনীষীরা যুগে যুগে নানাভাবে তাদের জবাব দিয়ে এসেছেন। আমরা আর তার পুনরাবৃত্তি করতে চাইনা। আমরা আমাদের পাটকদেরকে যে কতাগুলি স্মরকণ করিয়ে দিতে চাই তা হলো, একচন সত্যিকার মুমিনের অবশ্যই এ বিশ্বাস থাকতে হবে যে, রাসূলুল্লাহর (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) গোটা জীবন স্বয়ং আল্লাহ তা’আলা কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত ও পরিচালিত ছিল। নিজের ইচ্ছায় তিনি কিচুই করতেন না বা বলতেন না। সুতরাং তিনি যে বিষেগুলি করেছেন তা সবই আল্লাহর ইচ্ছা ও নির্দেশে করেছেন। দ্বিতীয়তঃ খীস্টান-ইহুদীদের প্রচার-প্রপাগান্ডায় যে প্রশ্ন আমাদের মনে দেখা দেয়, সেই রকম কোন প্রশ্ন কি কোন পুরুষ বা মহিলা সাহাবীর মনে কখননও দেখা দিয়েছিল? ইতিহাস অন্তত সে কথা বলে না। তাহলে আমরা আজ কেন বিভ্রান্ত হবো? আসলে এ জগতের সকল সৃষ্টির মালিক একমাত্র আল্লাহ। একজন মালিকের অধিকার আছে তার মালিকানাধীন বস্ত্ত যাকে এবং যত পরিমাণ খুশী দান করার। সে ক্ষেত্রে যেমন কারও কোন প্রশ্ন করার অধিকার থাকে না, এ ক্ষেত্রেও তাই। আল্লাহ তাঁর নবীকে (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এগারো জন স্ত্রী গ্রহণের অনুমতি দান করেছেন, যেমন একজন মুমিন পুরুষকে শর্তসাপেক্ষে চার জন স্ত্রী গ্রহণের সুযোগ রেখেছেন। এটাই ছিল আল্লাহর হিকমাত। মূলত এ সবই ঈমানের ব্যাপার। আমাদের ঈমান হতে হবে সাহাবায়ে কিরামের ঈমানের মত। আল্লাহর রাসূলের (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যাবতীয় কর্ম ও আচরণ আল্লাহর ইচ্ছা ও অনুমতিতে হয়েছে-এ বিশ্বাস শক্ত হলে কোন সংশয়, কোন অবান্তর প্রশ্ন অন্তর মাঝে উঁকি দিতে পারে না। যেমন পারেনি সাহাবায়ে কিরামের (রা) মনে।

রাসূলুল্লাহর (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বেগমগণ যেদিন থেকে তাঁর সাথে বিয়ের বাঁধনে আবদ্ধ হন এবং আল্লাহ তাঁদেরকে মুমিন বা বিশ্বাসীদের মা বলে ঘোষণা দেন সেদিন থেকেই জগতের সকল মুসলিমের অন্তরে এক বিশেষ মর্যাদা ও সম্মারে আসন তাঁরা লাভ করেছেন। প্রতিটি মুসলিম নব-নারী মায়ের থেকেও বেশি সম্মান ও শ্রদ্ধার দৃষ্টিতে তাঁদেরকে দেখে এসেছেন। মুসলিম উম্মার নিকট থেকে তাঁরা যে মর্যাদার আসন লাভ করেছেন, বিশ্বের নারী জাতির ইহিাসে তার দ্বিতীয় কোন নজীর নেই।

রাসূলুল্লাহর (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এক বেগমের ইনতিকাল হলে হযরত আবদুল্লাহ ইবন ‘আববাস (রা) সিজদায় লুটিয়ে পড়েন। লোকেরা প্রশ্ন করলো, আপনি এ সময় সিজদা করছেন কে? বললেনঃ ‘যখন কিয়ামতের কোন নিদর্শন দেখো তখন তোমরা সিজদা করে থাক। তাহলে আযওয়াজে মুতাহ্হারাত-এর মুত্যুর চেয়ে কিয়ামতের বড় নিদর্শন আর কী হতে পারে?’ (আবু দাউদঃ কিতাবুস সালাত, বাবুস সুজূদ ইনদাল আয়াত)

মক্কার অদূরে ‘সারাফ’ নামক স্থানে হযরত মায়মুনার (রা) ইনতিকালের সময় হযরত ‘আবদুল্লাহ ইবন ‘আববাস (রা) উপস্থিত ছিলেন। লাশ খাটিয়ায় উঠানোর সময় তিনি লোকদের বলেনঃ ‘ইনি মায়মূনা, তাঁর লাশ আদবের সাথে উটাবে, বেশি নাড়াচাড়া করবে না। (নাসাঈঃ কিতাবুন নিকাহ, জিকরু আমরি রাসূলিল্লাহ সা. ফিন-নিকাহ ওয়া আযওয়াজিহি)

কোনকোন সাহাবী আযওয়াজে মুতাহ্হারাতকে এত বেশি পরিমাণ ভালোবাসতেন যে, তাঁদের জন্য নিজের অনেক বিষয় সম্পত্তি ওয়াক্ফ করে দিয়েছেন। হযরত ‘আবদুর রহমান ইবন ‘আউফ (রা) তাঁদের জন্য্কটটি বড় বাগিচা ওয়াক্ফ করেন, যা চার হাজার দিরহামে বিক্রি করা হয়েছিল (তিরমিযীঃ মানাকিবু ‘আবদির রহমান ইবন ‘আউফ)

খুলফায়ে রাশেদুন-এর প্রত্যেক খলীফা ‘আযওয়াজে মুতাহ্হারাত’-এর খুবই সমাদর ও সম্মান করতেন। হযরত ‘উমার (রা) তাঁর খিলাফতকালে তাঁদের সংখ্যা অনুযায়ী নয়টি পিয়ালা বানিয়েছিলেন। কোন ফল বা কোন খাবার জিনিস যখন তাঁর নিকট আসতো তখন নয়টি পিয়ালা করে তাঁদের প্রত্যকের নিকট পাঠাতেন। (মুওয়াত্তা ইমাম মালিকঃ কিতাবুয যাকাত)

উটের যুদ্ধের সময় হযরত আলী (রা) সহ অন্যান্য সাহাবী জনতা উম্মুল মুমিনীন হযরত ‘আয়িশার (রা) প্রতি যে সম্মান প্রদর্শন করেছেন, ইতহাসের কোথাও কি তার তুলনা পাওয়া যায়?

হযরত যায়িদ ইবন হারিসার (রা) সাথে বিয়ে হয় হযরত যায়নাব বিনত জাহাশের (রা)। প্রায় বছর খানেক তাঁরা একসাথে ঘর করেন। বনিবনা না হওয়ায় ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। ‘ইদ্দত শেষ হওয়ার পর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সেই যায়িদকেই পাটালেন যায়নাবের (রা) কাছে বিষেয়র পয়গাম দিয়ে। যেহেতু রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যায়নাবকে (রা) বিয়ের পয়গাম পাঠিয়েছেন, তাই যায়িদের অন্তরে যায়নাবের (রা) প্রতি এত বেশি ভক্তি, শ্রদ্ধা ও সম্ভ্রমবোধ সৃষ্টি হয় যে, তিনি যায়নাবের দিকে চোখ তুলে তাকাতেই পারেননি। অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে ত৭ার সাথে কথা বলেন। এসব অলীক কোন কিস্সা-কাহিনী নয়, সবই বাস্তব সত্য।

হিজরী ২৩ সনে যখন খলীফা ‘উমার (রা) ‘আমীরুল হাজ্জ’ হিসেবে হজ্জে যান তখন অত্যন্ত শ্রদ্দা ও সম্মানের সাথে ‘আডওয়াজে মুতাহ্হারাত’কেও সফলসঙ্গী করেন। হযরত ‘উসমান (রা) ও হযরত ‘আবদুর রহমান ইবন ‘আউফের (রা) উপর তাঁদের নিরপত্তা ও দেখাশুনার সার্বিক দায়িত্ব অর্পণ করেন। তাঁরা দুইজন ‘আযওয়াজে মুতাহ্হারাতে’র বাহনের আগে পিছে চলতেন, কাউকে তাঁদের কাছে ঘেঁঘতে দিতেন না। যখন কোথাও যাত্রাবিরতি করতেন, কাউকে তাঁদের তাঁবুর ধারে কাছে আসতে দিতেন না। (তাবাকাতঃ ‘আবদুর রহমান ইবন ‘আউফের জীবনী)

রাসূলুল্লাহর (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইনতিকালের পর উম্মাহাতুল মু’মিনীনের অনেকে দীর্ঘদিন জীবিত ছিলেন। মুসলিম উম্মাহ যে তাঁদেরকে কী পরিমাণ সম্মান ও শ্রদ্ধা করেছেন তা আমরা তাঁদের জীবনীতে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। মোটকথা, তাঁদের প্রতি ভক্তি-শ্রদ্ধা ও সম্মান দেখানো একজন মুসলিমের ঈমানী দায়িত্ব ও কর্তব্য। মুসলিম উম্মাহ কোনকালেই সে দায়িত্ব ও কর্তব্য বিস্মৃত হয়নি। আমরাও যখন তাঁদের জীবনী পাঠ করবো, তখন আমাদের অন্তরেও তাঁদের সম্পর্কে একটা পবিত্র চিন্তা ও ভাব বজায় রাখবো।

আসহাবে রাসূলের জীবকথা বাংলাভাষী পাঠকদের নিকট তুলে ধরার চিন্তা ও পরিকল্পনা মূতলঃ বাংলাদেশ ইসলামিক সেন্টার-এর পরিচালক অধ্যাপক এ.কে.এম. নাজির আহমদ সাহেবের। তাঁর আগ্রহ ও উৎসাহ এ কাজ এতদূর এগিয়ে আনতে আমাকে অনগ্রাণিত করেছে। নানাভাবে তিনি আমাকে সাহায্য ও সহযোগিতা করে চলেছেন। এ জন্য আমি তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই এবং দু’আ করি আল্লাহ যেন তাঁকে এর ভালো প্রতিদান দেন।

সাহাবীদের জীবনকথা লেখার ব্যাপারে পাঠকদের নিকট থেকেও অনেক মূল্যবান উপদেশ ও পরামর্শ পাওয়া গেছে।ানেক পরামর্শ আমরা গ্রহণকরতে পারিনি বলে দুঃখিত। এ গ্রন্থের তথ্যসমূহ আরবী-উর্দূর নির্ভরযোগ্য সূত্রুসমূহ থেকে গ্রহণকরার চেষ্টা করছি। উম্মাহাতুল মুমিনীর-এর সুউচ্চ সম্মান ও মর্যাদার দিকে লক্ষ্য রেখে যথাযথ ভাষা ব্যবহারেও যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি। তা সত্ত্বেও যদি তথ্য ও ভাষাগত কোন অসংগতি পাঠকদের নিকট ধরা পড়ে তাহলে তা আমরা দৃষ্টিগোচর করার জন্য অনুরোধ করছি। বাংলার মুসলিম মা-বোনদের উপর ‘উম্মাহাতুল মুমিনীর’-এর বিশ্বাস আল্লাহ পাক আমাদের এ শ্রমটুকু কবুল করুন। আমীন \

৫ সেপ্টেম্বর, ১৯৯৯

২১ ভাদ্র, ১৪০৬মুহাম্মদ আবদুল মাবুদ

সহযোগী অধ্যাপক

আবরী বিভাগ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

ঢাকা-১০০০।


পিডিএফ লোড হতে একটু সময় লাগতে পারে। নতুন উইন্ডোতে খুলতে এখানে ক্লিক করুন।




দুঃখিত, এই বইটির কোন অডিও যুক্ত করা হয়নি