বিজ্ঞানময় কোরআন (Al-Quran Is All Science)
লেখকঃ মুহাম্মদ আবু তালেব
প্রকাশনীঃ খন্দকার প্রকাশনী
আমরা আধুনিক বিজ্ঞানের যুগে বসবাস করছি। প্রতিদিন নতুন নতুন বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব আবিস্কার হচ্ছে যার ফলে বৈজ্ঞানিক জ্ঞানের বহর বেড়েই চলেছে। কিন্তু আমরা অবাক বিস্ময়ে লক্ষ্য করি আধুনিক বিজ্ঞানের স্পষ্ট নির্দেশনা অনেক আগেই ঐশী গ্রন্থ আল-কোরআন পরিত্যক্ত করে রেখেছে। পবিত্র কোরআন বিজ্ঞান গ্রন্থ নয় বরং বিজ্ঞানের অনেক উর্ধ্বে ওহীর জ্ঞানবাহী কিতাব যা আল্লাহর শ্রেষ্ঠ নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-এর নিকট ৭ম শতাব্দীতে অবতীর্ণ হয়েছে। উক্ত গ্রন্থে লেখক মুহাম্মদ আবু তালেব Human embryology-র উপর সংক্ষিপ্ত তাত্ত্বিক বর্ণনা উপস্থাপন করেছেন। পবিত্র কোরআনের ৭৬:২ আয়াতে বর্ণিত আছে, “আল্লাহ মানুষ সৃষ্টি করেছেন সংমিশ্রিত নুফা (Sperm & ovum) থেকে।" Human embryology-র মূল তত্ত্ব হলাে sperm দ্বারা ovum নিষিক্ত হলে জ্বণ সৃষ্টি হয় যা ৭৬:২ আয়াতে আমরা দেখতে পাই।
spem ও ovum এর মধ্যে নিষেক (fertilization) ঘটার পর যে কোষটি গঠিত হয় তার নাম জাইগােট। এটি বাচ্চা থলির দেওয়ালে ঘেরা প্রকোষ্ঠে (uterus) স্থান লাভ করে। এখানে জাইগােট অবস্থান করে বর্ধিত হয়। বর্ধিষ্ণু জাইগােটের প্রাথমিক অবস্থাকে পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে 'আলাক’ (the blood clot) যার অর্থ জমাট রক্তপিণ্ড। এটি বাচ্চাথলির দেয়ালে ঝুলন্ত বস্তুর মত ঝুলে থাকে। পরবর্তী পর্যায়ের বৃদ্ধিকে বলা হয়েছে মুদগাহ বা মাংসপিন্ড যাকে বিজ্ঞানে বর্ণিত ভাষায় বলা হয় Somites 1 এরপর হাঁড় তৈরীর পর্যায় আরম্ভ হয়। প্রথমে যে হাড়গুলাে দেখা দেয় সেগুলাে উপরিভাগের কচি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ। প্রাথমিক ৬ সপ্তাহে কচি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ম্যাসেনচিমাল টিস্যুগুলাে (mesenchynal tissues) কোমল অস্থিতে পরিণত হয়ে কংকালের একটি মডেল গঠন করে। ১২ সপ্তহের মধ্যে জ্বণের একটি পূর্ণাঙ্গ কংকাল (Skeleton) গঠিত হয়। পরবর্তী পর্যায়টি হলাে পেশী (Muscles) গঠন প্রক্রিয়া। ৭ম সপ্তাহ থেকে কংকালতন্ত্র বিস্তৃতি লাভ করে এবং হাড়গুলাে পরিচিত আকার ধারণ করে। ৮ম সপ্তাহের সময় পেশীগুলাে হাড়ের চারপাশে আবৃত হতে থাকে। এভাবে একটি মানব শিশু পরিপূর্ণ হয়। | জ্বণবিজ্ঞানীরা কঠোর পর্যবেক্ষণ ও সাধনা করে জ্বণ বিকাশের স্তরগুলাে আবিস্কার করেছেন। আর পবিত্র কোরআনের ২৩:১২-১৫ আয়াতে ঐসব স্তরের পর্যায়ক্রমিক বর্ণনা খুব সরলভাবে ফুটে ওঠেছে। যা আধুনিক যুগের কোন জ্বণ। বিজ্ঞানী অস্বীকার করতে পারবে না ।
পৃথিবীর সমস্ত চিকিৎসাবিদরা এক বাক্যে স্বীকার করেছেন যে, মহিলাদের। ঋতুস্রাব (menstruation) একটি অসুস্থতা। এ সময়ে স্বামী-স্ত্রীর দৈহিক মিলন। উভয়ের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। আল্লাহ তাআলা কোরআনের ২:২২২ নং আয়াতের মাধ্যমে সে-ই ক্ষতিকর ব্যাপারটি আমাদের অবহিত করেছেন এবং ঋতুস্রাব কালে স্ত্রীর কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন থাকার উপদেশ দিয়েছেন। লেখক উক্ত গ্রন্থে ঋতুস্রাবের ক্ষতিকর দিকগুলাে তুলে ধরেছেন বিশ্বের বিশিষ্ট চিকিৎসক ও গবেষকদের উদ্ধৃতি সহকারে।
কোরআনের সাথে বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখার আধুনিক তত্ত্বগুলাের সামঞ্জস্য আলােচনা তুলে ধরে যে বিষয়টি গ্রন্থকার ব্যক্ত করতে চেয়েছেন তাহলে যারা কোরআনকে ঐশীগ্রন্থ হিসেবে স্বীকার করতে চান না কিংবা এটাকে অন্যান্য ধর্মগ্রন্থের মত নিছক একটি ধর্মগ্রন্থ মনে করেন। তারা হয়তাে কোরআন ভালভাবে পড়ে দেখেনি অথবা পড়লেও এর মর্মার্থ অনুধাবন করতে সক্ষম হননি। কোরআনের অলৌকিক বৈশিষ্ট্য উপলব্ধি করার জন্য এবং এর অন্তর্নিহিত জ্ঞানবিজ্ঞান বুঝার জন্য এ বইটি সকলের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং এর সুপাঠ্য। | বিষয়গুলাে পাঠকদের উপর বিশেষ প্রভাব ফেলবে বলে আমার বিশ্বাস।