আল্লাহ্‌ রাব্বুল আলামিন মুমিনদেরকে হিকমাহ বা বিজ্ঞান সম্মত কর্মপদ্ধতি অবলম্বন করে তাঁর দিকে লোকদেরকে আহ্বান জানাবার নির্দেশ দিয়েছেন। আল্লাহ্‌র নির্দেশ অবহেলা করে যেনতেন ভাবে দাওয়াত পরিবেশন করতে থাকলে সুফল পাওয়ার সম্ভাবনা আদৌ নেই। আহ্বান জ্ঞাপনের সর্বোত্তম পন্থা হচ্ছে ব্যক্তিগত সাক্ষাৎ ও ধারাবাহিক আলাপ আলোচনা। এই কাজ করতে হবে সুপরিকল্পিতভাবে।
প্রথমতঃ নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য কয়েকজন লোককে টার্গেট করতে হবে। লোক বাছাই কালে এমন সব লোককে বিবেচনায় রাখা দরকার যারা জাত কর্মী, সমাজের বিভিন্ন কর্মকান্ডে যাদের ভূমিকা আছে।
দ্বিতীয়তঃ এই টার্গেট লোকগুলোর সাথে আন্তরিক সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে। তাদের দুঃখ বেদনা ও প্রয়োজনের সময় তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে।
তৃতীয়তঃ অন্তরঙ্গ পরিবেশে তাদের সাথে সমাজ সমস্যা নিয়ে আলাপ করতে হবে। মনে রাখা দরকার, প্রত্যেক মানুষই জীবন ও জগত সম্পর্কে কোন না কোন ধ্যান ধারণা পোষণ করে। এই ধ্যন-ধারণা বিরোধী কোন বক্তব্য সে সহজে মেনে নিতে পারে না। আল্লাহ্‌র দিকে আহ্বানকারী ওসব ব্যক্তির ধ্যান-ধারণা অবশ্যই শুধরাতে চাইবেন। কিন্তু কাঠুরিয়ার কুঠোরের কঠোর আঘাত হেনে কোন ব্যক্তির বহু দিনের পোষিত ধ্যান-ধারনার মূলোচ্ছেদ করার যায় না। ধ্যান-ধারনার ভ্রান্তিগুলো চিহ্নিত করে যুক্তিপূর্ণ আলাপ আলোচনার মাধ্যমেই সেগুলো ব্যক্তির চিন্তাজগত থেকে বিদূরিত করতে হবে।
চতুর্থতঃ তাদের চিন্তাজগতে ইসলামী ধ্যান-ধারণার বীজ বপন করতে হবে। ইসলামী জীবন দর্শন ও জীবন বিধানের সাথে তাদেরকে পরিচিত করে তুলতে হবে। ইসলামের শ্রেষ্ঠত্ব ও সৌন্দর্য উপলব্ধি করতে পারলে তাঁর স্বীকৃতি দেবে না- মানব প্রকৃতি সাধারণতঃ এমনটি নয়।
পঞ্চমতঃ তাদেরকে ইসলামী আন্দোলনের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে সচেতন করে তুলতে হবে। ‘আল জিহাদু ফি সাবিলিল্লাহ’ সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারনা দিতে হবে। আর তাদেরকে পরিচিত করে তুলতে হবে ইসলামী আন্দোলনের বিশেষ মিজাজীর সঙ্গে।
ষষ্ঠতঃ তাদেরকে সংগঠনের অপরিহার্যতা বুঝাতে হবে। সংগঠন ছাড়া যে কোন আন্দোলন ষুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হতে পারেনা এবং আন্দোলনের ধারাবাহিকতা ও স্থায়িত্ব যে সংগঠনের উপরই নির্ভরশীল তা তাদেরকে ভালভাবে বুঝিয়ে দিতে হবে। সংঘবদ্ধ জীবন যাপনের তাকিদ দিয়ে আল্লাহ্‌ ও রাসুল (সাঃ) যেসব কথা বলেছেন সেগুলোর সাথে তাদেরকে পরিচিত করে তুলতে হবে।
তদুপরি সংগঠনের লক্ষ্য, কর্মসূচী, কর্মপদ্ধতিম, সাংগঠনিক কাঠামো, নেতা নির্বাচন পদ্ধতি, নেতার মর্যাদা ও ভূমিকা, নেতা-কর্মীর সম্পর্ক, কর্মীদের পারস্পরিক সম্পর্ক, আনুগত্য, পরামর্শ দান পদ্ধতি ও ইহতিসাব (গঠনমূলক সমালোচনা) পদ্ধতি সম্পর্কে তাদেরকে পুরোপরি ওয়াকিফহাল করে তুলতে হবে।


পিডিএফ লোড হতে একটু সময় লাগতে পারে। নতুন উইন্ডোতে খুলতে এখানে ক্লিক করুন।




দুঃখিত, এই বইটির কোন অডিও যুক্ত করা হয়নি